আজ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে বিতর্ক সভার আয়োজন করা হয়েছিল বিশ্বভারতীর লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে। সভার প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখার কথা ছিল বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তের। এই সভাকে কেন্দ্র করেই আজ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাস।
বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের একাংশ বিজেপি সাংসদের বিরোধিতা করে সকাল থেকেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন লিপিকা প্রেক্ষাগৃহের সামনে। বিক্ষোভের জেরে সভাস্থল সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় শ্রীনিকেতনে সোশ্যাল এডুকেশন ডিপার্টমেন্টে। বিকেল ৪টের সময় সেখানেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে সভা শুরু করেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ। উপস্থিত ছিলেন দুধকুমার মণ্ডল, দিলীপ ঘোষের মতো বীরভূম জেলা বিজেপি নেতারা। সভা শুরুর খবর পেয়ে বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা হাজির হন সোশ্যাল এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের বাইরে। বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদের সভা চলাকালীনই, সোশ্যাল এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের সবকটি জানালা খুলে দেন বিক্ষোভকারীরা। আটকে দেওয়া হয় সেমিনার হলের সবকটি দরজা!
সভাস্থলেই দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকার পর, ভিতর থেকে ট্যুইট করেন স্বপন দাশগুপ্ত। তিনি লেখেন, ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে শান্তিপূর্ণ সভা চলাকালীন যদি হামলা হয়, তখন কেমন লাগে? এটাই এখন ঘটছে বিশ্বভারতীতে। আমাদের একটা ঘরে তালাবন্দি করে রেখেছে উন্মত্ত কিছু মানুষ।’
বিজেপি সাংসদকে ঘেরাওয়ের ঘটনার নিন্দা করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ট্যুইট করেন। তিনি লিখেছেন, ‘রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত এবং বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে কয়েকঘণ্টা ধরে আটকে রাখা হয়েছে। রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র কুমারের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য অনুরোধ করেছি। এমন নৈরাজ্য আর আইনশৃঙ্খলার অবনতি, সত্যিই দুশ্চিন্তার।’ অন্য একটি ট্যুইটে রাজ্যপাল লেখেন, ‘রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবনতি হয়েছে, তা এই ঘটনাতেই বোঝা যাচ্ছে। উদ্বেগের বিষয়। সরকারের উচিত গুরুত্ব দিয়ে দেখা।’
বিকেল ৪টে থেকে রাত ৯টা। ৫ ঘণ্টা ঘেরাওয়ের পর, আন্দোলন প্রত্যাহার করেন বিশ্বভারতীর বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা। ঘেরাওমুক্ত হন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, এবং সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত-সহ বিজেপি নেতারা। বিক্ষোভের মুখে জেলাশাসকের গাড়িও আটকেছিলেন ছাত্র-ছাত্রীরা!
গত ১৯ সেপ্টেম্বর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে, আরএসএস-এর ছাত্রশাখা এবিভিপি-র অনুষ্ঠানে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ পড়ুয়াদের হাতে ঘেরাও হয়ে ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। বিশ্বভারতীতে কার্যত একই অভিজ্ঞতা হল বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তর।