ফুলবাড়ি: বিজেপি সাংসদ জন বার্লার পরে, এবার পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবিতে সরব ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। 'ব্যক্তিগত মত, বাংলা ভাগ চায় না বিজেপি', মন্তব্য করেছেন দিলীপ ঘোষ। তবে এর সমালোচনা করেছে তৃণমূল।
ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা উত্তরবঙ্গের সার্বিক উন্নয়ন চাই। উত্তরবঙ্গ সবসময় অবহেলিত। এখানকার মানুষের জন্য ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। সিপিএম সরকার যেমন অবহেলা করেছে, বর্তমান সরকারও ঠিক একই ভাবে অবহেলা করছে। তাই আগামী দিন আমরা চাইছি এখানে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল (UT) হোক।'
উত্তরবঙ্গ, প্রকৃতি যেখানে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছে। একদিকে কাঞ্চনজঙ্ঘার বিস্ময়। অন্যদিকে পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা ডুয়ার্সের মনমুগ্ধ রূপ। বাঙালির অভিন্ন হৃদয়, এই উত্তরবঙ্গকেই বাংলা থেকে বিভক্ত করার দাবি।
আর তা ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা, মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মণের পর, এবার ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য গড়ার দাবিতে সমর্থন জানালেন আরও এক জন প্রতিনিধি।
শিখা চট্টোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, আমার দলের সাংসদদের মন্তব্য থাকতেই পারে। এটা আমার নিজের বক্তব্য। উত্তরবঙ্গের প্রতিটি মানুষের আলাদা আলাদা বক্তব্য থাকতেই পারে। যদি সরকার এটা না চালাতে পারে, তাহলে সেই জায়গাটা ছেড়ে দিক।
গত শনিবার প্রথম ইস্যুটি তোলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ। তাঁর দাবিকে সমর্থন জানান মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিজেপি বিধায়ক। এই পরিস্থিতিতে পৃথক রাজ্যের দাবি নিয়ে ক্রমশ বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, 'বঙ্গভঙ্গের দাবি কেউ করেনি। সবাই বলছে বঞ্চনা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলের মানুষকে স্বাধীনতার পর থেকে সবাই বঞ্চনা করেছেন। তাই ওই সব এলাকার মানুষ বিরোধী দলকে ভোট দিয়েছেন। অধিকারের জন্য।
পরিবহনমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, জঙ্গলমহল, পাহাড়ের মানুষ আমাদের সাথে আছে। বিজেপি বিভ্রান্ত সৃষ্টি করে। বিচ্ছিন্নতাবাদী। সাময়িকভাবে চেষ্টা। বাংলার মানুষ একসঙ্গে থাকতে ভালোবাসি।
উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের দাবি জানিয়েছিল বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। সেই কারণে বিরুদ্ধে কোচবিহারে ৭টি অভিযোগ দায়ের করে তৃণমূল। তারই প্রেক্ষিতে মামলা রুজু করে দিনহাটা থানার পুলিশ। আলিপুরদুয়ার থানাতেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এরইমধ্যে বার্লার সুরে সুর মেলালেন ফালাকাটার বিজেপি বিধায়ক। সব মিলিয়ে, একের পর এক পৃথক রাজ্যের দাবি ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে।