সমীরণ পাল, বসিরহাট: ভোটপরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে শাসক-বিরোধী সংঘাতের মাঝে সৌজন্যের ছবি ধরা পড়ল বসিরহাটে। কৃষকসভার তালা বন্ধ পার্টি অফিস খুলে সিপিএম নেতাদের হাতে চাবি তুলে দিলেন তৃণমূল বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়। বাম শিবিরের অভিযোগ ছিল, ভোটের ফল বেরনোর পর তাঁদের ওই পার্টি অফিস দখল করে নিয়েছিল তৃণমূল।
রাজ্যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগ নিয়ে আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে শাসক-বিরোধী লড়াই। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস মামলায় সোমবারই কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে দিয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ।
আর সেই দিনই, শাসক-বিরোধী সৌজন্যের অন্য ছবি ধরা পড়েছে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের পিফা অঞ্চলে। সেখানে সিপিএমের বন্ধ পার্টি অফিসের তালা খুলে বিরোধী নেতার হাতে চাবি তুলে দেন বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক। তা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে মিষ্টিমুখও হয়।
স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, গত চৌঠা মে কৃষক সভার এই দলীয় কার্যালয়টি তৃণমূল কংগ্রেসের কিছু লোক দখল করে নেন। তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় তাতে। সোমবার কৃষকসভার ওই দলীয় কার্যালয়ের তালা খুলে দেন তৃণমূল নেতারা।
সিপিএম রাজ্য কমিটির সদস্য রাজু আহমেদ বলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসকে ধন্যবাদ। এটা অনন্য নজির হয়ে থাকবে চিরকাল।
বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, মা মাটি, মানুষের সরকার রাজ্যে গণতন্ত্র চায়। সাম্প্রদায়িক কোনও শক্তি রাজ্যে আমরা চাই না। বিরোধী হিসাবে সিপিএমকেই চাই।
১৯৮৫ সালে তৈরি পার্টি অফিসের চাবি ফেরতে পেয়ে খুশি বসিরহাটের সিপিএম নেতৃত্ব।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে চুঁচুড়ায় দেখা গিয়েছিল শাসক দলের বিধায়কের সৌজন্যতার ছবি। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বিজেপি কর্মীর বাড়িতে গিয়ে আশ্বস্ত করেছিলেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার। চুঁচুড়ার প্রতাপপুর অঞ্চলের ব্যবসায়ী দীপক দত্ত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র হয়ে কাজ করেন।মিটিং মিছিল প্রচার সবেতেই অংশ নেন। ভোটের ফল বেরোনোর পর কয়েকদিন ধরে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। সপরিবারে এলাকা থেকে উৎখাত করা হবে বলে শাসানো হয় । এই ঘটনার ব্যাপারে চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদারের কাছে অভিযোগ যায়। এর পরের দিনই বৃষ্টি মাথায় বিধায়ক হাজির হন ওই বিজেপি কর্মীর বাড়িতে। তাঁকে দেখে দীপক দত্তর সপ্তম শ্রেণীতে পড়া মেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে।তাকে বিধায়ক কাছে টেনে নিয়ে আশ্বস্ত করেন। পরে দীপকবাবু কেও তিনি ফোন নম্বর দিয়ে বলেন কেউ কিছু বললে জানাতে।বিধায়ক বলেন,গনতান্ত্রিক দেশে যে কেউ রাজনৈতিক দল করতে পারে।তার জন্য তাকে এলাকা ছাড়া করতে হবে নাকি! ভোটের সময় অনেক বিজেপি নেতা বলেছিলেন তৃনমূলকে রাজ্য ছাড়া করবে। যারা বলেছিলেন, তাঁরা তো দিব্যি আছে।আর দীপক তো এমন কিছুই করেনি।আমি বলেছি যদি কেউ হুমকি দেয় আমাকে জানাতে।ওর পরিবারের পাশে আছি।