মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় ও গোপাল চট্টোপাধ্যায়, শেওড়াফুলি, দুর্গাপুর ও সাঁইথিয়া: ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজির জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়ার প্রতিবাদে পথে নামল তৃণমূল। জেলায় জেলায় রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলকর্মীরা। হুগলির বৈদ্যবাটিতে নাগরিকমঞ্চের তরফে মিছিল করা হয়। যা নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।


নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫-তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুষ্ঠানে গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সামনেই ওঠে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান। বলতে উঠে এর তীব্র প্রতিবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু ‘জয় হিন্দ, জয় বাংলা’ বলেই পোডিয়াম থেকে নেমে যান মুখ্যমন্ত্রী।

কেন্দ্রীয় সরকারের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সামনেই ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান ওঠার প্রতিবাদে আজ রাজ্যজুড়ে পথে নামে তৃণমূল। কোথাও প্রতিবাদ মিছিল করা হয়। কোথাও আবার করা হয় বাইক র‍্যালি।

আসানসোলের আশ্রম মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে প্রায় আধঘণ্টা জিটি রোড অবরোধ করা হয়। দুর্গাপুরের ডিভিসি মোড়ে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলেও বিক্ষোভ দেখানো হয়।

আজ হুগলির বৈদ্যবাটিতে মিছিল হয়। বৈদ্যবাটি-শেওড়াফুলি শহর অধিবাসীবৃন্দের নামে ওই ধিক্কার মিছিলে অংশ নেন পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্যরা। ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরাও।

বীরভূমের দুবরাজপুর ও সাঁইথিয়ায় বাইক মিছিল করেন তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকরা। পাশাপাশি দমদমের সেন্ট মেরিস স্কুলের সামনে থেকে নাগেরবাজার পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার তৃণমূল কর্মী-সমর্থক মিছিল করে ঘটনার প্রতিবাদ জানান।

গতকাল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী দু’জনেই। শুরুটা হয়েছিল ভালভাবেই। প্রধানমন্ত্রীকে উত্তরীয় পরান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁরা একসঙ্গে ঘুরে দেখেন নেতাজি গ্যালারি। দেখেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কিন্তু এরপর মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য পেশ করার জন্য মঞ্চে উঠতেই দর্শকাসন থেকে ভেসে আসে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান। এই স্লোগান থামানোর অনুরোধ করেন আয়োজকরা। কিন্তু এই স্লোগানে ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কাউকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এভাবে অপমান করা যায় না। এটা রাজনৈতিক নয়, সরকারি অনুষ্ঠান। সরকারি অনুষ্ঠানের মর্যাদা রক্ষা করা উচিত। এটা কোনও রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠান নয়। কলকাতায় এই অনুষ্ঠান করার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী ও সংস্কৃতি মন্ত্রককে ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু প্রতিবাদ জানিয়ে আমি বক্তব্য রাখছি না।’ এরপর ‘জয় হিন্দ, জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে মঞ্চ ছেড়ে নিজের আসনে গিয়ে বসে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী।

রাজ্যজুড়ে এই ঘটনারই প্রতিবাদ জানাচ্ছে তৃণমূল।