রানা দাস, কাটোয়া: পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার চর সাহাপুরে ভাগীরথীর বাঁধ মেরামতি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ। সরব হলেন খোদ তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। বর্ষার আগে বাঁধ মেরামতি কেন নয়? প্রশ্ন তুলছেন গ্রামবাসীরা। বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন কাটোয়ার মহকুমাশাসক।
ইয়াস পরবর্তী পরিস্থিতিতে নদী বাঁধগুলির অবস্থা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। এবার পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া ২ নম্বর ব্লকে ভাগীরথীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের সংস্কার নিয়ে সেচ দফতরে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন শাসকদলের বিধায়ক। কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, চরম দুর্নীতি হচ্ছে। সেচ দফতরের ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী চরম সংশয়ে ছিলেন। আমরাও সংশয়ে আছি।
অভিযোগ, দুর্নীতির অঙ্কটা অন্তত ১ কোটি টাকার। কাটোয়া ২ নম্বর ব্লকের অগ্রদ্বীপ গ্রাম পঞ্চায়েতের চর সাহাপুর গ্রামে ভাঙনের সঙ্কট বহু পুরনো। গত একদশকে গ্রামের প্রায় অর্ধেক ভাগীরথীর গর্ভে তলিয়ে গেছে। কাটোয়ার চর সাহাপুরের বাসিন্দা কৌশল্যা চৌধুরী বলেন, নদীর গর্ভে অনেক কিছু চলে গেছে।
বর্ষার মধ্যেই ভাঙন রোধে বাঁশের খাঁচা-সহ বোল্ডার ফেলে বাঁধ মজবুত করার কাজ করছে সেচ দফতর। সেচ দফতর সূত্রের খবর, প্রতিটি বাঁশের খাঁচা, বোল্ডার ও শ্রমিকের মজুরি বাবদ খরচ ৫ হাজার ৭৫০ টাকা। ২৪০ মিটার বাঁধ বরাবর এমন ১৬৮০টি বাঁশের খাঁচা ফেলা হচ্ছে। আনুমানিক খরচ প্রায় ১ কোটি।কিন্তু বর্ষার সময়ে, যখন ভাগীরথীর ভয়ানক চেহারা, তখন কেন এই কাজ হচ্ছে? প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামবাসীরা। ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা জগন্নাথ বিশ্বাস বলেন, বর্ষার আগে এগুলো দিতে পারে, এটা এখন দিচ্ছে, খাঁচা ভেসে যাচ্ছে। সেচ দফতরের সুপারভাইজার গোপাল পালের কথায়, "এভাবেই দিতে হবে, ইঞ্জিনিয়াররা নিশ্চয়ই ঠিক বলছেন।"
এখানেই দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছেন কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক। যা নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "সেচ দফতর ১৬০০ খাঁচা বলে ৬০০ খাঁচা ফেলছে নাকি তার কোনো হিসাব নেই, আমি বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবো।" পূর্ব বর্ধমানের বিজেপি সহ সভাপতি অনিল দত্ত বলেন, "এতদিন বিরোধীরা বলত, তৃণমূলেরই বিধায়ক এখন বলছেন, দুর্নীতি কোথায় গেছে সেটা সাধারণ মানুষ বুঝুন।" কাটোয়া মহকুমাশাসক প্রশান্ত রাজ শুক্লা জানান, "পুরো বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। দুর্নীতি হয়ে থাকলে, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"