মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, মুন্না আগরওয়াল: পাস করানোর দাবিতে রাস্তায় নেমে, স্কুলে ভাঙচুর চালিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন এবারের উচ্চ মাধ্যমিক অনুত্তীর্ণরা। আর পাস করেও নম্বর বাড়ানোর দাবিতে শিক্ষকদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল দুর্গাপুর ও বালুরঘাটের সিবিএসই  দ্বাদশের পড়ুয়াদের একাংশ। যদিও নম্বর বাড়ানোর দাবি খারিজ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।


উচ্চ মাধ্যমিকের অনুত্তীর্ণদের রেজাল্ট বিক্ষোভের সংক্রমণ এবার সিবিএসই দ্বাদশের পড়ুয়াদের মধ্যেও। নম্বর বাড়ানোর দাবিতে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের দুটি স্কুলে প্রিন্সিপাল সহ অন্য শিক্ষকদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকরা। শুক্রবার প্রকাশিত হয়েছে সিবিএসই দ্বাদশের ফল। করোনা পরিস্থিতিতে পরীক্ষা না নিয়ে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছে এবারের রেজাল্ট। সেই রেজাল্ট নিয়ে এবার ভোক্ষ পড়ুয়াদের একাংশের।


কম নম্বর দেওয়ার অভিযোগে শনিবার দুর্গাপুরের জুম ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে শিক্ষকদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ওই স্কুলের সিবিএসই দ্বাদশ উত্তীর্ণ ছাত্রের দাবি, “দুর্গাপুর হেমশিলায় মার্কস এসেছে ৮৫ থেকে ৯০ পার্সেন্ট অ্যাবাভ। সেখানে জুমে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশে নম্বর ভ্যারি করছে। আমরা চাই মার্কস বাড়ানো হোক। ইলেভেন টুয়েলভের মার্কস যেন অ্যাড করা হয় থার্টি ফর্টি করে। মার্কস যেন এবভ সেভেন্টি ফাইভ টু এইট্টি পার্সেন্ট আসে, ব্যস।“  


ঘণ্টাখানেক ধরে বিক্ষোভ চললেও, নম্বর বাড়ানোর দাবি খারিজ করে দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। জুম ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রিন্সিপাল আরপি শেখরের বক্তব্য, “যারা ক্লাস ইলেভেনের পরীক্ষা সিরিয়াসলি নেয়নি, তাদের মার্কস অ্যাফেক্টেড হয়েছে, আমি মানছি। সিবিএসই-র পলিসি আছে। টেন, ইলেভেন, টুয়েলভ, এটার ওপর মডারেশন করেই কিন্তু বোর্ডের ক্লাস টুয়েলভের রেজাল্ট বের করেছে। ওদের একটা প্রভিশন রেখেছে, যারা স্যাটিসফাই হবে না, তারা কিন্তু পরীক্ষাতে বসবে ফিজিক্যালি, যেটার ডেট ওরা অগাস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ডিক্লেয়ার করবে।“


দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটেও টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ পাবলিক স্কুলে শিক্ষকদের আটকে রেখে নম্বর বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ওই স্কুলের সিবিএসই দ্বাদশ উত্তীর্ণ ছাত্র মৃন্ময় কুণ্ডুর কথায়, “”আমার ইচ্ছে ম্যাথ নিয়ে পড়ার। কিন্তু এই নম্বরে ইংলিশ ছাড়া কিছুই পাব না। আমি তাহলে কী করব। ওই ছাত্রের মা প্রতিভা কুণ্ডুর দাবি, স্কুলের গাফিলতিতে এই অবস্থা। যারা কোনওদিনই পড়াশোনায় ভাল ছিল না, তাঁদের নম্বর ভাল এসেছে। স্কুলের স্যারদের কাছে যারা টিউশন পড়েছে তাদের নম্বর ঠিকঠাক পাঠানো হয়েছে। বাকিদের ঠিকঠাক পাঠানোই হয়নি। সেকারণেই খারাপ রেজাল্ট।


এক্ষেত্রেও নম্বর বাড়ানোর দাবি খারিজ করে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ পাবলিক স্কুলের প্রিন্সিপাল শৈলেশ প্রসাদ সিনহা বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। সবটাই বোর্ডের রেজাল্ট। স্কুলের কোনও ব্যাপারই নেই।“ উচ্চ মাধ্যমিক থেকে সিবিএসই দ্বাদশ, পরীক্ষার ফল বেরনোর পরেও বিতর্কের বিরাম নেই।