হাওড়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কাপুরুষের মতো লুকিয়ে হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। উরির সেই জঙ্গি হামলা কেড়ে নিয়েছে দেশের ১৮ জন বীর সন্তানের প্রাণ। ফাঁকা করে দিয়েছে অনেক মায়ের কোল।
তার মধ্যে রয়েছে এরাজ্যের দুই মা-ও। যাঁদের সন্তান দেশকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন। একজন হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের যমুনা বালিয়া গ্রামের বাসিন্দা গঙ্গাধর দলুই। অন্যজন দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ ঘড়াই।
রাতেই দুই শহিদের দেহ আনা হয় কলকাতায়। বিমানবন্দর থেকে নিয়ে যাওয়া হয় কমান্ড হাসপাতালে।  মঙ্গলবার সকালে বাড়ি পৌঁছবে কফিনবন্দি দুই শহিদ।
২২ বছরের গঙ্গাধর মাত্র দু’বছর আগে সেনার চাকরি পেয়েছেন। বাড়িতে বয়স্ক বাবা-মা এবং ছোট ভাই। রোজগেরে বলতে একমাত্র গঙ্গাধর। ছোট থেকে ইচ্ছে ছিল সেনায় যোগ দেবেন। দেশের জন্য ছেলে শহিদ হয়েছে। বাবা-মা আজ গর্বিত। কিন্তু, সন্তান হারানোর যন্ত্রণার কাছে কোথাও যেন সেই গর্ব একটু একটু ফিকে হয়ে যাচ্ছে।
বাবা-মায়ের সঙ্গে গঙ্গাধরের শেষ কথা হয় বৃহস্পতিবার। বাবা-মাকে নিশ্চিন্ত করতে গঙ্গাধর বলে রেখেছিলেন, কয়েকদিন ফোনে নাও পাওয়া যেতে পারে। অপেক্ষা কোরো। শোকার্ত মা এখনও বলে চলেছেন, গঙ্গা ফোন করবেই।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এদিন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় শহিদ গঙ্গাধর দলুইয়ের বাড়িতে যান। সাগর গ্রাম পঞ্চায়েতের সূর্যবিন্দা গ্রামে এই মাটির বাড়িতেও সকাল থেকে উপচে পড়ছে ভিড়। উরির জঙ্গি হামলা কেড়ে নিয়েছে এই গ্রামের ছেলে বিশ্বজিৎ ঘড়াইয়ের প্রাণ। শহিদের বাবা জানান, ছেলের জন্য তাঁরা গর্বিত।
এদিন গোটা গ্রামে কোনও বাড়িতে হাঁড়ি চড়েনি। সবার চোখে জল। বিশ্বজিৎ বলে গেছিল এবার বাড়িটা পাকা করবে। বোনের বিয়ে দেবে। কিন্তু, সেটা আর হল না। বিশ্বজিৎ আবারও এই গ্রামে ফিরবে। তবে কফিনবন্দি হয়ে।