বাঁকুড়া: লক্ষ্য ২০২১-এর বিধানসভা ভোট। সে কথা মাথায় রেখে ভোট ঘোষণার আগেই ‘উন্নয়ন’-কে হাতিয়ার করে আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্ক নিজেদের দখলে রাখতে ও নিতে আসরে নেমে পড়েছে যুযুধান দু’পক্ষ তৃণমূল ও বিজেপি। আজ সকালে বাঁকুড়া-২ ব্লক এলাকার কাঞ্চনপুরে আদিবাসী পাড়ায় গিয়ে প্রচার চালানোর পাশাপাশি প্রার্থীর নাম ছাড়াই দেওয়াল লিখন করলেন তৃণমূলের মহিলা সংগঠনের জেলা সভানেত্রী মৌ সেনগুপ্ত। অন্যদিকে, বসে নেই বিজেপির মহিলা মোর্চার কর্মীরাও। সংগঠনের জেলা সভানেত্রী মনিকা দত্তের নেতৃত্বে মহিলা মোর্চার কর্মীরা আজ বাঁকুড়া-২ ব্লকের মৌকুড়া গ্রামে গিয়ে অলচিকি হরফে দেওয়াল লেখার পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে ভোটের প্রচার সারলেন। এমনকী আদিবাসী পরিবারের মাটির উঠোনে বসে চপ, মুড়ি, শশা, পেঁয়াজ, মুলা, কাঁচালঙ্কা সহযোগে জলখাবারও খেলেন তাঁরা।


তবে তৃণমূল ও বিজেপি প্রচার শুরু করে দিলেও, সাধারণ মানুষ যে তিমিরে ছিলেন, সেখানেই আছেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় লোকজনের বক্তব্য, তাঁদের এখানে রাস্তাঘাটের সমস্যা রয়েই গেছে। সেভাবে উন্নয়ন হয়নি, দাবি আদিবাসী সমাজের একাংশের। স্থানীয় বাসিন্দা বৈদ্যনাথ হাঁসদা, মনিন্দ্র বাস্কেরা বলছেন, ‘কোথায় উন্নয়ন? রাস্তাঘাট থেকে বার্ধক্যভাতা, কিছুই হয়নি। ভোট এলেই রাজনৈতিক নেতাদের গ্রামে দেখা মেলে। ভোট শেষ হলে আর কারও দেখা পাওয়া যায় না।’

রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের বক্তব্য অবশ্য আলাদা। সবারই দাবি, মানুষ তাঁদের সঙ্গেই আছেন।

তৃণমূলের মহিলা সংখঠনের জেলা সভানেত্রী মৌ সেনগুপ্ত বলেন, ‘উৎসবের মেজাজে ধামসা মাদলের তালে আদিবাসী সমাজের মানুষ দেওয়াল লিখন করেছেন। তাঁরা ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যের ক্ষমতায় দেখতে চাইছেন।’

পাল্টা বিজেপি মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী মনিকা দত্তর দাবি, ‘২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে আদিবাসী সমাজ আমাদের সঙ্গে ছিলেন, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটেও তাঁরা আমাদের সঙ্গেই থাকবেন। শিক্ষার দিক থেকে আদিবাসী সমাজ পিছিয়ে আছে। বিজেপি এ রাজ্যে ক্ষমতায় এলে আদিবাসীদের উন্নয়নে জোর দেওয়া হবে।’

বিধানসভা নির্বাচনের আর বেশিদিন বাকি নেই। আগামী মাসেই ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হতে পারে। ইতিমধ্যেই তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলিও ভোটের দিকে তাকিয়ে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছে।  গত লোকসভা ভোটে বাঁকুড়ায় বিজেপি-র ভাল প্রভাব দেখা গিয়েছে। এবার তাই আদিবাসী ভোট নিজেদের দিকে টানতে মরিয়া তৃণমূল। বিজেপি আবার নিজেদের জমি হারাতে নারাজ। ফলে যুযুধান দু’পক্ষের টক্কর শুরু হয়ে গিয়েছে।