বোলপুর: তৃণমূলকে হারানোর জন্য বাংলার ভূমিপুত্ররাই যথেষ্ট। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এখান থেকেই হবেন। বহিরাগত বিতর্কে তৃণমূলকে জবাব দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বাংলায় পরিবর্তনের ডাক দিয়ে ফের ২০০ আসন জয়ের দাবি করেছেন অমিত শাহ। দিবাস্বপ্ন দেখছে বিজেপি। কটাক্ষের সুরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জবাব দিয়েছে তৃণমূল।

এদিন বোলপুরে বিশাল রোড শো-র পর সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্নের উত্তরে অমিত শাহ বলেছেন, মমতাকে হারানোর জন্য বাংলার ভূমিপুত্ররাই যথেষ্ট, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বাংলা থেকেই হবেন।

তৃণমূলের বহিরাগতর পাল্টা বিজেপির ভূমিপুত্র!  একুশের মহাযুদ্ধ জয়ের লক্ষ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা রাজ্য চষে বেড়াচ্ছেন। পাল্টা বিজেপি নেতাদের গায়ে বহিরাগত তকমা লাগাতে তৎপর তৃণমূল। দু’দিনের রাজ্য সফরে তারই জবাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

বলেছেন, মমতা যখন কংগ্রেসে ছিলেন, তখন ইন্দিরা গাঁধী এলে কী বলতেন? যখন কংগ্রেসের ছিলেন, যদি প্রণব দা বা নরসিমা রাও এলে কী বলতেন? এক রাজ্যের মানুষ অন্য রাজ্যে যাবেন না? এত চিন্তাভাবনা করবেন না দিদি!

এরপর তিনি বলেন, মমতা দিদি আপনাকে হারাতে দিল্লি থেকে কাউকে আসতে হবে না। বাংলার ভূমিপুত্রই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হবেন।

গত ১০ ডিসেম্বর ডায়মন্ডহারবারের সভায় যাওয়ার পথে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার কনভয়ে হামলা হয়! যে ঘটনার জল গড়ায় দিল্লি পর্যন্ত। এদিন তা নিয়ে তৃণমূলকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন অমিত শাহ। তিনি ওই ঘটনার নিন্দা করে বলেন,  আমি মনে করি, বিজেপি সভাপতির ওপর হামলা, গণতন্ত্রের ওপর হামলা। ক্ষমতার দম্ভ মাথার ওপরে চড়ে গেলে এই ধরনের ঘটনা ঘটায়। এভাবে বিজেপিকে রুখে দেওয়া যাবে না। হিংসার জবাব গণতান্ত্রিকভাবে দেবে বিজেপি।

জে পি নাড্ডার কনভয়ে হামলার প্রসঙ্গ টেনে এদিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে তীব্র রাজনৈতিক আক্রমণ শানিয়েছেন অমিত শাহ। তিনি বলেছেন, হিংসার জবাব আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে জবাব দেব। হামলার পর রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষস্তর থেকে যে প্রতিক্রিয়া আসার দরকার ছিল, সেরকম কিছু হয়নি। তৃণমূল নেতাদের বয়ানও এটা প্রমাণ করে যে সরকার উদাসীন ছিল।

তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় অভিযোগ খারিজ করে  বলেছেন,  রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে। মামলা হয়েছে। গ্রেফতারও করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

নাড্ডার কনভয়ে হামলার পর রাজ্যের ৩ আইপিএস-কে ডেপুটেশনের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। যার সমালোচনা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী ট্যুইট করেন,পুলিশ অফিসারদের বদলি করে রাজ্যের অধিকারে নির্লজ্জভাবে নাক গলাচ্ছে কেন্দ্র। বাংলাকে সমর্থন করার জন্য দিল্লি, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী এবং স্ট্যালিনকে ধন্যবাদ। এঁরা প্রত্যেকেই যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে মজবুত রাখার প্রতি সমর্থন জানিয়ে বাংলার পাশে দাঁড়িয়েছেন।

এ ব্যাপারে অমিত শাহ বলেছেন, আমরা এমন কিছু করিনি, যা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো-বিরুদ্ধ। এমন কিছু থাকলে নির্দিষ্ট করে রাজ্য সরকার বলুন, আমরা জবাব দিতে তৈরি।

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় পরিবর্তনের ডাক দিয়ে ফের ‘মিশন টু হান্ড্রেডের’ কথা মনে করিয়ে দেন অমিত। তিনি বলেন, বাংলায় পরিবর্তন আসবে। ২০০-র বেশি আসনে জিতবে বিজেপি। পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে দল।

তৃণমূলের কটাক্ষ, দিবাস্বপ্ন দেখছে বিজেপি।

বিধানসভা ভোট আগামী বছর। কিন্তু তার অনেক আগেই কেন্দ্র আর রাজ্যের শাসক দলের শীর্ষ নেতা-নেত্রীরা রণবাদ্য বাজিয়ে দিয়েছেন। যার জেরে এই শীতেও বাংলার রাজনৈতিক আঁচ গনগনে।