পূর্ব মেদিনীপুর ও কলকাতা: এবার নন্দীগ্রামের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর। কয়েকদিন আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন মমতা-সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী। এদিন নন্দীগ্রামের জনসভায় তাঁরই প্রাক্তন নেত্রীকে আক্রমণ করলেন শুভেন্দু। তিনি বলেছেন, ‘আমি আসব শুনে অনেকে পগারপার হয়ে গেছেন। এখানে ‘আবার যখন কর্মসূচি ঘোষণা করবে, আমি আবার আসব।’
নাম না করে এভাবেই মমতাকে চ্যালেঞ্জ জানালেন শুভেন্দু। ছবিতে কালি লাগানো নিয়ে অভিষেককেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বলেছেন, যাঁদের পেটে আমার ভাত রয়েছে, তাঁরা আমার ছবিতে রং লাগাচ্ছেন। সেই ছবি তুলে তোলাবাজ ভাইপোকে পাঠানো হচ্ছে।
শুভেন্দুর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, এটা অত্যন্ত কুরুচিকর মন্তব্য। এতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল ও সরকারের সমস্ত ক্ষমতা উপভোগ করার পর এ ধরনের কুরুচিকর মন্তব্য শুভেন্দুর মুখে মানায় না। অখিল গিরি অসুস্থ সবাই জানেন। সেই কারণেই মমতার সভা আপাতত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেজন্য যদি এ ধরনের মন্তব্য করা হয়, তা একেবারেই অনুচিত। নন্দীগ্রামে শুভেন্দুকে বিধায়ক করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ২৯৪ আসনে আমিই প্রার্থী। তখন তো শুভেন্দু তো সাহস করে বলেননি যে, আমাকে দেখে ভোট দিন। এটা কুরুচিকর মন্তব্য। এতে কৃতজ্ঞতা বোধ ও রাজনৈতিক সৌজন্যের কোনও সম্পর্ক নেই।
কুণাল বলেছেন, এটা আসলে আদি ও তৎকাল বিজেপিদের মধ্যে লড়াইয়ের প্রতিফলন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও কুৎসা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন কুণাল। তিনি নারদ স্টিং ফুটেজের প্রসঙ্গ তুলেও শুভেন্দুকে খোঁচা দিয়েছেন।
দলবদলের পর আজ প্রথম নন্দীগ্রামে পা রাখলেন শুভেন্দু অধিকারী। অরাজনৈতিক কর্মসূচিতে টেঙ্গুয়া থেকে নন্দীগ্রাম বাজারের কাছে জানকীনাথ মন্দির পর্যন্ত রোড শো করলেন নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক।
শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগদানের পর ৭ জানুয়ারি প্রথমবার নন্দীগ্রাম যাওয়ার কথা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পরদিন অর্থাৎ ৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে দেন শুভেন্দু অধিকারীও।
কিন্তু, সোমবার তৃণমূলের তরফে জানানো হয়, ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামের সভায় যোগ দেবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


পঞ্চায়েতমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, অখিল গিরি সভার মুখ্য আয়োজক, তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি, তাই সভা পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

বিজেপি অবশ্য এনিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, ভয় পেয়ে যাচ্ছেন না মমতা, রামনগরে অখিল গিরির সঙ্গে ৪টে লোক নেই, তিনি নন্দীগ্রামে সভায় লোক করবেন? ভাঙিয়ে আর খাওয়া যাবে না বুঝেছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রাম না গেলেও, তৃণমূল ও বিজেপির কর্মসূচির টক্কর থাকছেই। তৃণমূল সূত্রে খবর,৭ জানুয়ারি ভাঙাবেড়ায় শহিদস্মরণে অংশ নেবেন সুব্রত বক্সি ও ফিরহাদ হাকিম।নন্দীগ্রাম কলেজ মাঠে কর্মিসভা করবেন সুব্রত বক্সি।বিজেপি সূত্রে খবর, ৭ জানুয়ারি ভাঙাবেড়ায় একটি স্মরণসভায় অংশ নেবেন শুভেন্দু অধিকারীও।পরের দিন নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মাঠে সভা করবেন তিনি।

গত বুধবার শুভেন্দুর গড় কাঁথিতে দাঁড়িয়ে তাঁকে আক্রমণ করেছিলেন ফিরহাদ হাকিম, সৌগত রায়রা। পরদিন কাঁথিতে পাল্টা সভা করে জবাব দেন শুভেন্দুও।