কলকাতা: বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফার দিনেই হাওড়ার বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়াকে বহিষ্কার করল তৃণমূল। দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠকে বৈশালীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাজীবের ইস্তফার পর দলের অভ্যন্তরীন বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে সরব হন বৈশালী। রাজীবের পাশে দাঁড়িয়ে দলের কিছু নেতার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। বিশেষ করে নাম না করে মন্ত্রী তথা হাওড়ার তৃণমূল নেতা অরূপ রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফা প্রসঙ্গে বৈশালী ডালমিয়া নাম না করে মন্ত্রী অরূপ রায়কে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, 'সবার প্রতি তাচ্ছিল্য ভাব প্রকাশ করেন উনি। মন্ত্রিত্ব একটা আলঙ্কারিক পোস্ট। জনগণ সেটা দেয়নি। কিন্তু জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমরা সবাই সমান।'
এর আগে লক্ষ্মীরতন শুক্লার মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফার দিনেও দলের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন বালির বিধায়ক। বলেছিলেন, উইপোকারা দলকে কুরে কুরে খাচ্ছে।  দলের বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ করতে থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের পথে হাঁটল তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি।
উল্লেখ্য, বৈশালীও দলত্যাগ করতে পারেন, এমন একটা জল্পনা কিছুদিন ধরেই তৈরি হয়েছিল। ত কিছুদিন আগে থেকেই বৈশালী ডালমিয়ার নানা আচরণ রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তীব্র করেছিল। যে জগদীপ ধনখড় রাজ্যপাল হয়ে আসার পর থেকে তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর সংঘাত চরমে, সম্প্রতি রাজভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। সেই ছবি ট্যুইট করেছিলেন রাজ্যপাল।


শেষপর্যন্ত তাঁকে বহিষ্কার করল তৃণমূল।
অরূপ রায় এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ওই বিধায়ক দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কাজ করছিলেন। সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, তৃণমূল মুষল পর্ব শুরু হয়েছে।

তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, ভোটের মুখে বৈশালী যে বিবৃতি দিচ্ছেন, তা দলের পক্ষে ঠিক নয়।

বৈশালী ডালমিয়াকে বহিষ্কারের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট করে  তৃণমূলের পক্ষ থেকে বুঝিয়ে দেওয়া হল, কেউ প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়ে দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করলে, তা একদমই বরদাস্ত করা হবে না।

২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে, একই দিনে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা এবং জগমোহন ডালমিয়ার মেয়ে, বৈশালী।

দলের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় বৈশালী বলেছেন, বিজেপিতে যাওয়া নিয়ে এখনও কিছু ভাবিনি। আমার কাছে বহিষ্কারের কোনও ফোন আসেনি। মানুষের পাশেই থাকবতাঁর প্রশ্ন, মানুষের পাশে দাঁড়ানো কি দল বিরোধী কাজ?

হাওড়ায় আমফানের ত্রাণ বন্টনে দুর্নীতির অভিযোগও করেছেন বৈশালী।