হুগলি: ২০১১ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে কার্যত একচেটিয়া আধিপত্য তৃণমূলের। একুশের বিধানসভা ভোটের আগে সেই ভোট নিজেদের দিকে টানতে তৎপর হল কংগ্রেস।
মঙ্গলবারই বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানকে নিয়ে হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় ফুরফুরা শরিফে যান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সেখানে তিনি বলেন, সিপিএম এবং কংগ্রেস মিলে বাংলায় ধর্মনিরপেক্ষ জোট তৈরি করে লড়ছে, তাই বাংলাকে বাঁচাতে সমর্থন চাইতে এসেছি, এনাদের দোয়ার জন্য।
পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকির সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়নি। আলাদা আলাদা করে পীরজাদা ইব্রাহিম সিদ্দিকি এবং আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন অধীর-মান্নান। পরে ইব্রাহিম সিদ্দিকি বলেন, অধীর ও মান্নানের সঙ্গে পজিটিভ কথা হয়েছে। আগামীদিনে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়তে হবে।
আব্বাস সিদ্দিকি বলেন, এর আগে অনেক ধর্মনিরপেক্ষ দল ভোটের আগে এসেছে, ভোটের পরে সব দল কমলা হয়ে গেছে, আগামী ডিসেম্বর মাসে বিধানসভায় নতুন দল ঘোষণা করতে চলেছি, আমরা বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল সবাইকে বলছি, আগামী দিনে বিজেপির বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই করি।
অতীতে একাধিকবার রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভের সুর শোনা গেছে ত্বহা সিদ্দিকির গলায়। যদিও, কংগ্রেসের ফুরফুরা শরিফে যাওয়া নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। ভোট আসছে বলেই দেখা করতে গেছে বলে মন্তব্য করেন দলের মুখপাত্র প্রবীর ঘোষাল। যদিও, বিরোধী দলনেতা ও চাঁপদানি কংগ্রেস বিধায়ক আব্দুল মান্নান বলেন, প্রতি বছরই আসি, এবছরও।
সূত্রের দাবি, সম্প্রতি ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দির সঙ্গে ফোনে কথা হয় এক বিজেপি নেতার। আলোচনার জন্য ত্বহাকে দিল্লি আসতেও বলা হয়। যদিও, তিনি রাজি হননি।
পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু ভোট প্রায় ৩০ শতাংশ। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, পশ্চিমবঙ্গের ২৯৪টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৬০ থেকে ৬৮টিতে ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে বাংলাভাষী মুসলিম সম্প্রদায়। আরও প্রায় ৩০টি আসনে আংশিকভাবে তাঁদের প্রভাব রয়েছে।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এরাজ্যের ১৮টি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত আসনের ৪টি তৃণমূলের থেকে বিজেপির হাতে গিয়েছে। এগুলি হল বালুরঘাট, কোচবিহার, বনগাঁ এবং রানাঘাট।
ইতিমধ্যে আসাদউদ্দিন ওয়েসির দল মিম জানিয়েছে, তারাও একুশের ভোটে এরাজ্যে ঝাঁপাতে চলেছে। সেক্ষেত্রে মিম-ও খানিকটা সংখ্যালঘু ভোট কাটবে বলেই ধারণা পর্যবেক্ষকদের। সব মিলিয়ে বিধানসভা ভোটের আগে সংখ্যালঘু ভোটের সমীকরণ নিয়ে টানাপোড়েন তুঙ্গে।