কলকাতা: চিটফান্ডকাণ্ডে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের দাবিতে সোচ্চার হওয়া কুণাল ঘোষকে কটাক্ষ করলেন কুণাল ঘোষ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, "কারোর কাছে তথ্য থাকলে পুলিশকে দিন। কারোর কাছে তথ্য প্রমাণ থাকলে সিবিআইকে দিন। আসলে পুলিশ ধরেছে বলে ওনার কষ্ট হচ্ছে।"


এর আগে, মঙ্গলবার শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের দাবি তোলেন কুণাল ঘোষ। ছবি দেখিয়ে আইকোর চিটফান্ডের সঙ্গে শোভনের জড়িত থাকার দাবিও করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র। যদিও প্রাক্তন মেয়রের দাবি, অর্ধসত্য বলছেন কুণাল। বলেন, ও নিজে প্রোমোটার। ও যেভাবে নেতৃত্বকে ফাসিয়েছে, দলকে বিতর্কিত করেছেন। কুণালের মতো নটোরিয়াস কালপ্রিটকে ঘেন্না করি। কোন চিটফান্ডের সঙ্গে ১০০ কিমির মধ্যে আমার কোনও সম্পর্ক নেই।


বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিজেপির ব্যাটন হাতে শোভন চট্টোপাধ্যায় রাস্তায় নামতেই তাঁর দিকে ধেয়ে এল বছরের পর বছর উত্তর না পাওয়া সেই অমোঘ প্রশ্ন! কুণাল ঘোষ বলেন, নারদে এতদিন ধরে তদন্ত চলছে। সিবিআই-ইডি কী করছে? ওকে গ্রেফতার করে ভূবনেশ্বরর জেলে নিয়ে যেতে হবে। মির্জা গ্রেফতার, মুকুল নয় কেন? পুলিশ-সাংবাদিক গ্রেফতার হবে, আর রাজনৈতিক নেতাদের গলায় মালা পরিয়ে রাখা হবে কেন?


পাল্টা শোভন বলেন, এই কুণাল আগে বলেছিল মমতাকে গ্রেফতার করতে হবে।


সোমবার রোড শো থেকে চিটফান্ডকাণ্ড নিয়ে ডেলোর বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে সারদা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত কুণাল ঘোষকে নিশানা করেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। বলেছিলেন, কে কার জন্য অপেক্ষা করেছিল? সুদীপ্ত সেনকে ট্র্যাপ করে ওই লোকটা সব করেছে। একজন সাংবাদিক। ১৫ লক্ষ টাকা মাইনে। কী করে হয়?


কুণাল ঝুলি থেকে বের করলেন আইকোর! ছবি দেখিয়ে আইকোর চিটফান্ডের সঙ্গে শোভনের জড়িত থাকার দাবিও করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র। দাবি করেন, বার্ষিক অনুষ্ঠানে প্রোমোটার শোভন। শোভন ওখানে কী করছিলেন? তদন্ত থেকে বাঁচতে বিজেপিতে গিয়েছেন। আমি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি দিয়েছি। সিডিও পাঠিয়েছি। আমাকে উত্তর দিয়েছে যথাযথ তদন্ত হবে। কিন্তু কবে?


পাল্টা বিজেপি নেতা বলেন, দুর দুর পর্যন্ত প্রোমোশোনের চেষ্টা আসে না। ছবি দেখিয়ে সেটা হাসির খোরাক হচ্ছে। সবাক চলচ্চিত্র যাকে বলে উত্তম কুমারের নামাঙ্কিত যে উত্তম মঞ্চ বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। সেই জায়গায় দাড়িয়ে আইকোরকে বলেছিলাম মঞ্চ ভেঙে মাল্টিপ্লেক্স করা যাবে না।


শোভনের পাশাপাশি, বৈশাখীকেও আক্রমণ করেন কুণাল। বলেন, উনি তো শিক্ষক, চিটফান্ডের টাকা যিনি নিয়েছেন, তাঁর পাশে থাকতে খারাপ লাগে না। পাল্টা বিজেপি নেত্রী বলেন, এত স্থূল কথা বলছেন, এটা ওদের দলের মুখেই শুনেছি। কুৎসিৎ লাগে। আমি তো হাত পেতে ঘুষ নিতে দেখিনি। যদি দেখে থাকেন, তাহলে তখন কেন প্রতিবাদ করেননি। শোভন-মুকুলশুভেন্দু টার্গেট, বাকিরা তো ওনার দলে রয়েছেন। তাহলে লজ্জা করছে না?


২০১৩-য় সারদা কেলেঙ্কারি সামনে আসার পর পশ্চিমবঙ্গে হেন কোনও ভোট নেই, যাতে চিটফান্ড ইস্যু হয়নি! শুধুমাত্র কুশীলবরা তখন কেউ তৃণমূলে ছিলেন, এখন তাঁদের কেউ কেউ বিজেপিতে! তবে, তাঁদের দল পরিবর্তনে অবশ্য হতভাগ্য সর্বহারাদের ভাগ্য পাল্টায়নি! তাঁরা এখনও সেই নিঃস্ব।