সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগণা: ভোটমুখী বঙ্গে ক্রমশ জনপ্রিয়তা বাড়ছে খেলা হবে স্লোগানের। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থক থেকে শুরু করে নেতারা সবার মুখে মুখে ঘুরছে যে স্লোগান। যদিও সোশাল মিডিয়ায় খেলা হবে স্লোগানে আপত্তি জানিয়ে দলের অস্বস্তি বাড়ালেন হাবড়ার তৃণমূল নেতা জাকির হোসেন। তাঁর দাবি, এই স্লোগানের আড়ালে পেশি শক্তির আভাস রয়েছে। তৃণমূলের নেতৃত্বে জাকিরের যে পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ। আর গোটা বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করার সুযোগ ছাড়ছে না বিজেপি।
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বেশ কয়েকটি জনসভা থেকে বলেছেন, ‘খেলা হবে। আমি থাকব গোলরক্ষকের ভূমিকায়, দেখি কে জেতে কে হারে।’ নেত্রীর বক্তব্যের সুর ধরেই এবারের বিধানসভা ভোটে খেলা হবে স্লোগানকে সামনে রেখেই প্রচার শুরু করেছে তৃণমূল। এহেন পরিস্থিতিতে স্লোগানের বিরোধিতায় সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন হাবড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা তৃণমূল নেতা জাকির হোসেন। তৃণমূল নেতার দাবি, এই স্লোগানের আড়ালে পেশি শক্তির আভাস রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূল নেতার এই পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
তার এই পোস্টটি ঘিরে ফের উত্তাল স্থানীয় রাজনীতি। এমিতেই লোকসভা ভোটের নিরিখে ফলাফল যথেষ্ট চিন্তায় জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের খাসতালুক হিসেবেই যা পরিচিত। এর মাঝে আবার জাকির হোসেনের বেফাঁস মন্তব্যে রীতিমতো ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও জাকির হোসেনের এটিকে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অভিমত বলে দাবি করেছেন। তাঁর স্থানীয় কর্মীরা এই খেলা হবে খেলা হবে স্লোগানে আতঙ্কিত এবং তারা মনে করছেন যে এবার ভোটে গন্ডগোলের আশঙ্কা করছেন।
দলে আলোচনা না করে, মতান্তরের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনায় দলীয় নেতার ওপর ক্ষুব্ধ তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। তৃণমূল নেতাকে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির নেতা বলে অ্যাখ্যা দিয়ে শাসকদলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। এর আগে দলত্যাগীদের মুচলেকা লেখার কথা বলে দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন ওই তৃণমূল নেতা। হাবরা শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সিতাংশু দাস জানান, খেলা হবে স্লোগানকে স্বীকৃতি দিয়েছে দল। জাকির তার মতামত দলের অন্দরে জানালে ভালো করতেন। ফেসবুকে লিখে জাকির মোটেই ঠিক কাজ করেননি এবং তাঁর সঙ্গে দেখা হলে তিনি এই ব্যাপারটি জাকির কে জিজ্ঞাসা করবেন।
এদিকে গোটা বিষয়ে খোঁচা দিয়ে জাকিরের জন্য রাস্তা খোলা রাখার বার্তা দিয়েছে বিজেপি। বিজেপির বারাসাত জেলা ওবিসি মোর্চার সভাপতি নীলরতন মিত্র সাফ জানান, জাকির হোসেনের ভাবমূর্তি যথেষ্ট পরিচ্ছন্ন। দীর্ঘদিন হাবড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নেই তিনি যদি বিজেপির রীতি মেনে আবেদন জানান বিজেপি তাঁকে গ্রহণ করবে।