পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: জোটের ব্রিগেড মঞ্চ থেকে যখন বাম নেতারা তৃণমূলকে উৎখাতের ডাক দিচ্ছেন, তখন বাঁকুড়ায় গিয়ে বামেদের সমর্থন প্রার্থনা করলেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। কারণ, জঙ্গলমহলে তৃণমূলের মাথাব্যথা বিজেপি!
গত লোকসভা ভোটে, জঙ্গলমহলে ঘাসফুল উপড়ে ফুটেছিল পদ্ম! তাৎপর্যপূর্ণভাবে বিজেপির ভোট যত বেড়েছিল, পাল্লা দিয়ে কমেছিল বামেদের ভোট।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে বামেরা প্রায় ২০ শতাংশ ভোট পেলেও, গত লোকসভা নির্বাচনে তা নেমে আসে ৭ শতাংশে!
ওই দুই ভোটে বিজেপির ভোট ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে পৌঁছে যায় ৪০ শতাংশে!
বিজেপির এই উত্থান নিয়ে বামেদেরই কাঠগড়ায় তোলে তৃণমূল। দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, সিপিএম বিজেপিকে প্রচুর ভোট দিয়েছে। আর ওরা সিপিএমকে প্রচুর টাকা দিয়েছে। ওদের ২৭-২৯ শতাংশ ভোট ছিল। তা থেকে ২০ শতাংশ গেলে তবেই বিজেপির ৩৭ শতাংশ হয়।’
আরও পড়ুন:
গত নভেম্বরে বাঁকুড়া সফরের পর এই তত্ত্বই শোনা গিয়েছিল খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র মুখে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, গত লোকসভা ভোটে সিপিএমের অনেকে বিজেপিতে যোগ না দিয়েও আমাদের সাহায্য করেন। এবার তাদের দলে টানার চেষ্টা করতে হবে।
রবিবার সেই বাঁকুড়ার ছাতনা বিধানসভা এলাকার ইন্দপুরে পদযাত্রা পর রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বামেদের উদ্দেশ্যে সরাসরি সমর্থনের আবেদন জানান। জৈব-প্রযুক্তিমন্ত্রী বলেন, যদি বামপন্থী হন, মমতাকে ভোট দিন, তৃণমূলকে ভোট দিন। বা নিজের দলকেই দিন। দয়া করে ভোট ট্রান্সফার করবেন না।
ভোটের আগে নিজের দল সামলান! পাল্টা কটাক্ষ করেছে সিপিএম। সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র বলেন, তৃণমূলের সবাই বিজেপিতে চলে যাচ্ছে। এটা কি ওনার খুব ভালো লাগছে? এতো দিন ব্রাত্য বাবু ব্রাত্য ছিলেন, এখন মুখপাত্র হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। কারণ ঐ দলের সামনের সারীতে কেউ নেই।
গত লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়ার ২টি লোকসভা আসনেই জয়ী হয় বিজেপি। বিধানসভাভিত্তিক পরিসংখ্যান বলছে, জেলার ১২টি বিধানসভাতেই এগিয়ে গেরুয়া শিবির।
আসছে বিধানসভা ভোটে কী হবে? তৃণমূল কি পারবে ব্যবধান ঘোচাতে? বামেরা কি ফের একবার গা ঝাড়া দিয়ে উঠতে পারবে? নাকি জঙ্গলমহলবাসী বিজেপিকে আরও সুযোগ দেবেন? -- উত্তর মিলবে আগামী ২ মে।