রানাঘাট: জীবনযন্ত্রনায় কাতর নদীয়ার দুই শারীরিক প্রতিবন্ধী বোন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানন্ত্রীর কাছে তাঁরা স্বেচ্ছামৃত্যুর আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার কোনও জবাব পাওয়া যায়নি। এতে রমা ঘোষ (৩৪) এবং তাঁর বোন কৃষ্ণা ঘোষ (২৮) খুবই হতাশ।

নদিয়ার পাটুলি গ্রামের বাসিন্দা এই দুই বোন শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্মিত বিশেষ গাড়িতে চলাফেরা করেন। আর তৃতীয় কোনও ব্যক্তির সাহায্য ছাড়া কোনও কাজ করতে পারেন না।

বাবা অরুণ ঘোষ (৬০) পরিবারের অন্নসংস্থান করতে কাজ করেন। তাই তাঁর পক্ষে দুই মেয়েকে কোনও সাহায্য করা সম্ভব হয় না। এই কাজটা করেন তাঁদের মা যমুনা। দুই মেয়ে সম্পূর্ণভাবে তাঁদের মায়ের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু তাঁরও তো বয়স হচ্ছে। বর্তমানে ৫৭ বছরের তিনি।

দিনে দিনে পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করছে। রমা ও কৃষ্ণা জানিয়েছেন, তাঁরা জেলা প্রশাসনের কাছে সাহায্যের আর্জি জানালেও কোনও কাজ হয়নি।

যদিও রানাঘাটের মহকুমা শাসক জানিয়েছেন, ওই দুই বোনকে ইন্দিরা আবাস যোজনায় বাড়ি দেওয়া হয়েছে।এছাড়াও তাঁরা ইন্দিরা গাঁধী জাতীয় শারীরিকভাবে অক্ষমদের জন্য পেনশনও পাবেন। তাঁরা এই পেনশনের জন্য আবেদন জানিয়েছেন।

কিন্তু ওই বোন এভাবে সরকারি সাহায্য নয়, বেঁচে থাকার জন্য সরকারি চাকরি চাইছেন। রমা ও কৃষ্ণা বলছেন, তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী তাঁরা চাকরি চান। কিন্তু মহকুমা শাসক বলেছেন, সরকারি আইনে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধীদের সরাসরি চাকরি দেওয়ার কোনও সংস্থান নেই।

রমা ও কৃষ্ণার পরিবার জেলা শাসক সুমিত গুপ্তর কাছেও আর্জি জানিয়েছেন। জেলাশাসক জানিয়েছেন, তিনি মহকুমা শাসককে বিষয়টি দেখতে বলেছেন।

দুই বোন বলছেন, তাঁরা তাঁদের স্বেচ্ছামৃত্যুর আর্জির বিষয়ে ইতিবাচক জবাবের অপেক্ষায় রয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, সরকার যদি আমাদের সাহায্য করতে না পারে তাহলে অনন্ত নিজেদের ইচ্ছায় মৃত্যুর অনুমতিটা দিতে পারে।