মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: জাপানের জাতীয় ফল পার্সিমন থেকে কাশ্মীরি আপেল। নিজের জমিতে বাহারী ফল চাষ করে বাজিমাত পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার বাসিন্দা হরিসাধন গরাইয়ের! সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন কৃষি দফতরের আধিকারিকরা।


কোথায় কাশ্মীর আর কোথায় কাঁকসা। দূরত্ব ২০০০ কিলোমিটারেরও ঢের বেশী। জাপান তো আরও দূরে। সেই সুদূর জাপানের জাতীয় ফল পার্সিমন থেকে কাশ্মীরি আপেল। নিজের জমিতে এসব চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার বাসিন্দা হরিসাধন গড়াই। 


দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে জাপানের নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলায় প্রায় দু'লক্ষ অধিবাসী অধ্যুষিত শহরটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। 


পরে সেই ভূমিতে যে উদ্ভিদ কুঁড়ি ফুটিয়ে পুনরায় জীবনের সূচনা করেছিল সেটি ছিল পার্সিমন। বর্তমানে জাপানের যেটি জাতীয় ফল। জাপানের জাতীয় ফল কাঁকসার মাটিতে ফলিয়ে তাক লাগাচ্ছে ওই যুবক। 


গন্ধরাজ লেবু থেকে পেয়ারা, কাঁঠাল, কুল--- সেসব তো আছেই। এছাড়াও পান, বেদানা, লেবু নানারকমের ফল সারা বছর ধরে উৎপাদন হচ্ছে এই বাগান থেকে। কিন্তু কাঠফাটা রোদ্দুর আর গরমকে হার মানিয়ে শীতপ্রধান এলাকার ফল ফলিয়ে এলাকার মানুষের নজর কেড়েছেন কাঁকসার যুবক।


রাসায়নিক সারের ব্যাবহার করেনি জৈব সারের ওপরই গুরুত্ব দিয়েছেন বেশি। তিনি বলেন, আমি জৈব সার ব্যবহার করে চাষ করেছি, দেড় বছর ধরে চাষ করেছি। ফলন ভালো। পার্সিমন গাছে ফুল এসেছে, কাশ্মীরি আপেল হয়েছে, কমলা লেবু, পেয়ারা, অনেক দিন ধরে ইচ্ছে ছিল।


নিজের বাগানে এভাবে দেশীয় প্রযুক্তিতে শীতপ্রধান রাজ্যের ফল এবং সবজি নিজের বাগানে চাষ করে এলাকার যুবকদের উৎসাহ যোগাচ্ছে এবং স্বনির্ভর হওয়ার বার্তা দিচ্ছে কাঁকসার বিষ্ণুপুরের যুবক হরিসাধন গড়াই। 


খবর পেয়ে হরিসাধনের জমি পরিদর্শনে যান কৃষি দফতরের আধিকারিকরা। কাঁকসার কৃষি আধিকারিক অনির্বাণ বিশ্বাস বলেন, এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। এই মাটিতে আপেল চাষ হয়েছে, আমাদের তরফে যাবতীয় সাহায্য করা হবে। 


কাঁকসা ব্লকের কৃষক সেলের দায়িত্বে থাকা গিরিধারী সিনহা জানিয়েছেন, ওই যুবকের উদ্যোগকে দেখে এগিয়ে আসুক এলাকার অন্যান্য যুবকরা।রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যুবক-যুবতীদের স্বনির্ভর হওয়ার কথা জানাচ্ছেন। অন্যদিকে এই যুবক মুখ্যমন্ত্রীর আদর্শে এগিয়ে যাচ্ছে। 


কথায় বলে, ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। প্রতিবেশীরা বলছেন, ইচ্ছশক্তির জোরেই বাজিমাত করেছেন হরিসাধন!