অতসী মুখোপাধ্যায়, ঘাটাল : ডুবে গিয়েছে শ্মশানঘাট। প্রিয়জনের সত্কার করতে রাস্তার ধারেই চিতা জ্বালিয়েছেন আত্মীয়-স্বজনরা। দাসপুরের রাজনগরে ধরা পড়েছে এই ছবি। যে দিকে চোখ যায় শুধুই জল! শীবালতীর জলে ভেসে গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল, দাসপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। ঘর-বাড়ি-সংসারই শুধু ডোবেনি, ডুবে গিয়েছে শ্মশানঘাটও। প্রিয়জনের সত্কার করার জন্য এক টুকরো ডাঙা খুঁজে পেতেই হয়রান পরিবার। শেষমেষ, পাকা রাস্তার ধারে জ্বলে উঠেছে চিতা। বুধবার দাসপুর থেকে নাড়াজোল যাওয়ার রাস্তায় রাজনগরে ধরা পড়ল এই ছবি। 


পশ্চিম মেদিনীপুরের শিলাবতীর জলে প্লাবিত পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল ও দাসপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। বিপর্যস্ত জন-জীবন। বুধবার বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দেব। তারই মধ্যে ত্রাণ বিলি নিয়ে শুরু হয়ে গেছে তৃণমূল ও বিজেপির চাপানউতোর। ঝুমি আর শিলাবতীর জলে প্রতিবার ঘাটালের ১ থেকে ১২ নম্বর ওয়ার্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু শনিবার গভীর রাতে মহকুমাশাসকের অফিসের পাঁচিল ভেঙে হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করে ঘাটাল শহরের অন্য তীরের ৫টি ওয়ার্ডে।
ঘাটাল ব্লক এবং পুরসভা এলাকার অধিকাংশই বন্যা কবলিত। বাড়ি ঘরে জল ঢুকেছে। যাতায়াতের জন্য মানুষের ভরসা এই ছোট নৌকা। যাকে স্থানীয় ভাষায় বলে ডোঙা। বানভাসি ঘাটালে হাসপাতাল, অফিস-আদালতে পৌঁছতে গেলে এই ডোঙা বা নৌকাই ভরসা। তাই অনেকের বাড়িতেই বছরভর রাখা থাকে এই ধরনের ছোট নৌকা।


বুধবার বন্যা কবলিত এলাকা ঘুরে দেখেন ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দেব। অধরা ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান! রাজনৈতিক দোষারোপ চলছে! বুধবার সাংসদ দেবের গলাতেও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ পেল। তিনি বলেন, ' যাঁরা বাইরে থেকে এসে বলে গেল সোনার বাংলা বানাবো, কিন্তু এখন তারা কোথায়? এত চিঠি, এত বলার পরেও ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান হয় না' । অন্যদিকে আবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগে সরব ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক। আদৌ কি কোনওদিন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত হবে? প্রশ্নটা থেকে যাচ্ছে। আর যতদিন না এই পরিকল্পনা সফল হয়, ততদিন বছর বছর ঘটালের ছবিটা বদলানো বেশ কঠিন।