জলপাইগুড়ি মিউনিসিপ্যালিটি মার্কেট সংলগ্ন একটি বাড়ির নিচতলায় স্ত্রী লিপিকাকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন এলআইসি-র ডিভিশনাল অফিসার উত্তম মোহন্ত।
তাঁর মেয়ে দিনহাটার একটি কলেজে পড়াশোনা করেন। সেই সূত্রে তিনি বেশিরভাগ সময়ই দিনহাটার পৈত্রিক বাড়িতে থাকতেন। মাঝেমধ্যে আসতেন মা-বাবার কাছে।
২৯ জুন ওই তরুণী দিনহাটায় জেঠুদের ফোন করে জানান, বাবা মারা গিয়েছে!
ওই রাতেই জলপাইগুড়িতে ভাইয়ের ভাড়াবাড়িতে চলে আসেন দাদারা। দেহ দেখে সন্দেহ হওয়ায়, থানায় লিখিত অভিযোগ জানান তাঁরা। তদন্তে নেমে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে যায় পুলিশ। ঘর থেকে বিষের গন্ধ পান তদন্তকারীরা!
এরপরই মৃতের স্ত্রী লিপিকা মোহন্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর তাতেই রহস্যের উদঘাটন!
পুলিশ সূত্রে দাবি, স্ত্রী জানিয়েছেন, বছর দুয়েক ধরে স্থানীয় যুবক অনির্বাণ রায়ের সঙ্গে তাঁর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। সেই সূত্রে মাঝেমধ্যেই লিপিকার বাড়িতে আসতেন ওই যুবক।স্ত্রীর পরিচিত হওয়ায় আপত্তি করতেন না উত্তম।
২৯ জুনও প্রেমিকার বাড়িতে ছিলেন অনির্বাণ। পুলিশ সূত্রে খবর, লিপিকার দাবি,
ওই দিন দুপুরে উত্তমকে আমের রস খেতে দেন অনির্বাণ। তারমধ্যেই বিষ মেশানো ছিল! আমের রস খাওয়ার পরই ঝিমিয়ে পড়েন বছর বাহান্নর উত্তম!
অপরাধ ঢাকতেও কোনও কসুর করেননি লিপিকা ও তাঁর প্রেমিক। পুলিশ সূত্রে দাবি, লিপিকা জানিয়েছেন,ময়নাতদন্ত হলে বিপদ হবে, এটা বুঝতে পেরে, স্বামীর দেহ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়।
এই কাজে সাহায্য করেন প্রেমিকের পরিচিত এক অ্যাম্বুল্যান্স চালক।
ওই চালকের পরিচিত এক আয়ুর্বেদিক চিকিত্সককে দিয়ে ডেথ সার্টিফিকেট তৈরি করায় লিপিকা ও অনির্বাণ।
কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হল না! ভাইয়ের মৃত্যুর নেপথ্যে কোনও রহস্য আছে, বুঝতে পেরে দাদারা তড়িঘড়ি জলপাইগুড়ি চলে আসায় মৃত্যুরহস্য উদঘাটিত হল। স্বামী খুনে জড়িত থাকার অভিযোগে ধৃত স্ত্রীর ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়েছে। যদিও তাঁর প্রেমিক অনির্বাণ এখনও অধরা!
উল্লেখ্য, বারাসতেও মনুয়া তাঁর প্রেমিক অজিতকে দিয়ে স্বামী অনুপমকে নৃশংসভাবে খুন করিয়েছিল।