সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: মানুষকে বাঁচাতে পথে যম! মাস্ক না পরে কেউ বাইরে বেরোলেই রে-রে করে তেড়ে যাচ্ছেন তাঁর দিকে! ন্যায়দণ্ড কাঁধে নিয়ে করছেন তীব্র ভর্ত্‍‍সনা! পরক্ষণে আবার নিজে হাতেই তুলে দিচ্ছেন মাস্ক! বিশ্ব পরিবেশ দিবসের সকালে মানুষের প্রাণ বাঁচাতে যমের দৌড়ঝাঁপ দেখল হুগলির চন্দননগর।


কী দেশ, কী রাজ্য--দৈনিক সংক্রমণ খানিকটা কমলেও, দৈনিক মৃত্যুতে উদ্বেগ যেন কিছুতেই কমছে না। দেশে প্রতিদিন কমবেশি ৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। রাজ্যের সংখ্যাটা ১০০-র বেশি। মৃত্যু মিছিল দেখতে দেখতে ক্লান্ত দেশবাসী। 


আর এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ রাজপথে নেমে এলেন সাক্ষাৎ যম! তবে শমনের সমন নিয়ে নয়। মহামারীতে নিজের দুয়োরে কাঁটা দিতেই হুগলির চন্দননগরে পথে নেমেছেন যমরাজ। 


ফরাসি ইতিহাসের শহরে গঙ্গা তীরবর্তী স্ট্র্যান্ড রোড বরাবর করোনা যুদ্ধে দেখা গেল তাঁকে। মানুষকে মাস্ক পরিয়ে প্রাণে বাঁচাতে তৎপর তিনি। 


যেখানেই দেখলেন কেউ মাস্ক পরেনি, সেখানেই দিলেন কড়া ধমক। পরে নিজে থেকেই মাস্ক তুলে দিলেন তাঁদের হাতে। 


যমরাজ হয়ে ঘুরে বেড়ানো যাত্রাশিল্পী শঙ্কর দাস জানালেন, মারণ ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ভয়াবহ চেহারা নিলেও মাস্ক পরতে এখনও অনেকেরই অনীহা। তাঁদের সচেতন করতেই ন্যায়দণ্ড হাতে নিয়ে রাস্তায় নামা। 


হুগলির একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে, করোনা সচেতনতায় শনিবার এভাবেই চলল প্রচার। শিল্পীদের তরফে স্ট্র্যান্ডরোডে একটি পথনাটিকা উপস্থাপনা করা হয়। 


৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস। তাই মাস্কের পাশাপাশি পথচারীদের চারাগাছও বিলি করেন যমরাজ। 


এদিকে, বাংলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ অব্যাহত। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৭ হাজার ৬৮২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।


দৈনিক মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১৮।  রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে।  মোট মৃতের সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৬ হাজার ১৫২। 


রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের শনিবারের বুলেটিন বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ২৪ পরগনায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬৬৪ জন।  তবে কলকাতায় দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা নেমে গিয়েছে আটশোর নীচে। 


গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ২৪ পরগনায় মৃত্যু হয়েছে ২৮ জনের। কলকাতায় মারা গেছেন ২৩ জন।