সুনীত হালদার, হাওড়া : হাওড়ার গাদিয়াড়ায় বাড়তি রোজগারের সুযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। ইয়াস ও ভরা কটালের প্রভাবে ভেড়িগুলো ভেসে যাওয়ায় প্রচুর চিংড়ি ঘুরে বেড়াচ্ছে রূপনারায়ণের জলে। সকাল থেকে সেই চিংড়ি ধরেই লাভের মুখ দেখছেন তাঁরা।
কথায় বলে কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ। ইয়াসের তাণ্ডবে হাজার হাজার মানুষ আজ সর্বস্বান্ত। কেউ হারিয়েছেন বাড়িঘর, কারও আবার ভেড়িতে নোনাজল ঢুকে নষ্ট হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ। কিন্তু, হাওড়ার গাদিয়াড়ায় ছবিটা অন্য। সেখানে চারদিকে ভয়াবহ ক্ষতির মধ্যেও লাভের মুখ দেখছেন স্থানীয়রা।
ইয়াসের জেরে প্রবল বৃষ্টি আর ভরা কটালের প্রভাবে নদীর জল বিভিন্ন ভেড়িতে ঢুকে যায়। সেই ভেড়ির জল আবার গিয়ে মিশেছে রূপনারায়ণ নদীতে।ফলে ভেড়ি থেকে ভেসে যাওয়া হরেকরকম চিংড়ি এখন মিলছে রূপনারায়ণে। রবিবার সকাল থেকে মাছ ধরতে শুরু করেন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের দাবি, এক এক জন প্রায় ৫ থেকে ৭ কিলো চিংড়ি ধরেছেন। বাজারে বিক্রি করে দাম মিলেছে কেজি প্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।
আর এই চিংড়ি ধরার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ মাছ ধরতে ভিড় জমান গাদিয়াড়ায়। করোনা আবহে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে বাইরের লোক ঢোকার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ।
গত বুধবার সকালে ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। ওড়িশার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে যা ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। একে ঘূর্ণিঝড় তার ওপর ভরা কটাল দুইয়ে মিলিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগণা জেলা সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মাছ চাষে। দক্ষিণ ২৪ পরগণার একাধিক জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে।
সমুদ্রের জল ঢুকে এসে ভেড়ি যেমন ভাসিয়েছে তেমনই একের পর এক গ্রাম প্লাবিত করে দিয়েছে, যার জেরে এখনও ঘরবাড়ি জলের তলায়। খাবার জলের সমস্যা বিভিন্ন জায়গায়। সরকার ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ত্রাণের ভরসায় অনেকেরই দিন কাটছে। হাওড়া গ্রামীণের বেশ কিছু এলাকাও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে এর মাঝেই উঠে এসেছে একেবারে ভিন্ন ছবিও।