কলকাতা: প্রতিদিন সন্ধে সাড়ে ৬টায় শেষ হয়ে যায় কাজ। বাড়ি ফেরেন বরানগরের বাসিন্দা পার্থসারথী মণ্ডল। মাঝেমধ্যে দেরি হলে জানিয়েও দিতেন ফোন করে। কিন্তু সোমবারের সন্ধে ছিল একেবারেই অন্যরকম। আর বাড়ি ফেরা হবে না, সেটা আন্দাজও করতে পারেননি রেলের ডেপুটি চিফ কর্মাশিয়াল ম্যানেজার পার্থসারথী মণ্ডল।


গতকাল সন্ধে ৬টা ১০-এ স্ট্র্যান্ড রোডে পূর্ব রেলের অফিসের ১৩ তলায় আগুন লাগে। ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। মৃতদের এই তালিকায় আছেন রেলের ডেপুটি চিফ কর্মাশিয়াল ম্যানেজার পার্থসারথি মণ্ডলও। বরানগরের শ্রীমানি পাড়ার বাসিন্দা এই রেল আধিকারিকের বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী-মেয়ে ও জামাই। পার্থসারথী মণ্ডলের জামাই অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, প্রতিদিন সিঁড়ি দিয়ে নামতেন বাপি। জানি না কেন কাল লিফটে নামলেন। হয়ত কোনও সহকর্মী বা কেউ আটকে আছে কি না তা দেখতেই গিয়েছিলেন।


ভয়াবহ এই ঘটনায় শোকের ছায়া সব মহলে। অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় জানান, গতকাল সন্ধে নাগাদ বারবার ফোন করা সত্বেও ফোন ধরেননি পার্থসারথী মণ্ডল। শেষমেশ ফোনে না পেয়ে পূর্ব রেলের অফিস চত্বরে হাজির হন তিনি। অভিজিতের কথায়, ৬টা ২০তে ফোনে চেষ্টা করি। ফোন ধরেননি বাপি। অন্যদিন কাজ থাকলে জানিয়ে দেন। ৮টার পর বেড়িয় যাই। ওখানে গিয়ে দেখি আগুন জ্বলছে। অফিসারকে জিজ্ঞেস করি। কিন্তু অনেকক্ষণ ধৈর্য ধরার পর দেখি মুখ্য়মন্ত্রী এসেছন। ওঁকেই সবটা জানাই। এরপর এক অফিসার ভেতরে নিয়ে যান। দেখি লিফটে বাপি পড়ে আছেন।


উল্লেখ্য, আগুন লাগার পরও কীভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল বিল্ডিংয়ে? এই ঘটনায় গাফিলতি কার? সেই প্রশ্ন উঠেছে ইতিমধ্যেই। গতকালই স্পেশাল পারমিশন করিয়ে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ময়নাতদন্ত হয়েছে। জানা গিয়েছে, দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে দুজনের। শরীরে কার্বন মনোক্সাইড পাওয়া গিয়েছে। আগুনে ঝলসে গিয়েছেন ৭ জন। ১ জনকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। সূত্রের খবর, তাঁর ডিএনএ টেস্ট করা হতে পারে।