বেজিং: এতদিন গোটা বিশ্ব তাড়াহুড়ো করে চিন ছাড়ছিল। এবার চিনারা আমেরিকা ছাড়ছেন।


কারণ সেই করোনা। চিনে নাকি করোনার প্রভাব কমেছে, ছড়িয়ে পড়েছে বাকি বিশ্বে। ধনীতম দেশ আমেরিকায় করোনায় মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে, এই পরিস্থিতিতে ধনী চিনা পড়ুয়ারা তড়িঘড়ি আমেরিকা ছেড়ে দেশে ফিরছেন। বাবা মাকে চাপ দিয়ে হাজার হাজার ডলার খরচ করে প্রাইভেট জেটের সিট বুক করছেন তাঁরা।

গোটা বিশ্বেই এখন কার্যত লকডাউন। বাড়ি ফেরার উপায় বলতে শুধু অল্প কিছু চার্টার্ড ফ্লাইট আর প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর ৬০ ঘণ্টার উড়ান। সাংহাইয়ের আইনজীবী জেফ গং যেমন আমেরিকায় পঠনরত মেয়েকে প্রশ্ন করেছেন, সে ১,৮০,০০০ ইউয়ান বা ২৫,৪৬০ ডলার পকেট মানি চায়, না প্রাইভেট ফ্লাইটে করে বাড়ি ফেরার টিকিট? তাঁর মেয়েই শুধু নয়, আমেরিকার বেশিরভাগ চিনা পড়ুয়াই এখন দ্রুত দেশে ফিরতে চান। কিন্তু মুশকিল হল, যখন তখন বাতিল হয়ে যাচ্ছে বিমান। মঙ্গলবার আমেরিকা আর চিনের মধ্যে যাতায়াত করা ৩,৮০০টি উড়ানের মধ্যে ৩,১০২টিই বাতিল হয়ে গিয়েছে। তাই পড়ুয়ারা চেষ্টা করছেন বেশ কয়েকজন মিলে একটি উড়ান ভাড়া করে দেশে ফিরে আসতে।

কিন্তু সমস্যা হল, বেজিং তাদের মূল ভূখণ্ডে বিদেশ থেকে যাবতীয় চার্টার্ড ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে, শিগগিরই একই পথে হাঁটবে সাংহাই। হংকং ও ম্যাকাও-ও ট্রানজিট ফ্লাইট নামতে দিচ্ছে না। ফলে হু হু করে বাড়ছে প্লেনের টিকিটের দাম। লস অ্যাঞ্জেলস থেকে সাংহাইমুখী মার্কিন এয়ার চার্টার সার্ভিসের ১৪ আসনের বম্বার্ডিয়ার ৬০০০ আসন পিছু নিচ্ছে ২.৩ মিলিয়ন ইউয়ান বা ৩২৫,৩০০ ডলার। এ জন্য প্রথমেই মিটিয়ে দিতে হচ্ছে ২৩,০০০ ডলার। কিন্তু চিন থেকে আসা বিমানকে আমেরিকায় নামতে দেওয়া হচ্ছে না, আবার আমেরিকায় নথিবদ্ধ বিমান চিনে নামতে পারছে না।

জানা যাচ্ছে, মুখে স্পষ্ট করে না বললেও চিন সরকার চায় না, অন্য দেশে থাকা তাদের নাগরিকরা দেশে ফিরে আসুন। তাই সরকারি নির্দেশ না এলেও মৌখিকবাবে এই সব উড়ান বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, দ্রুত বন্ধ হচ্ছে পড়ুয়াদের ফিরে আসার যাবতীয় রাস্তা।