ওয়াশিংটন: সূর্যরশ্মি, উষ্ণতা ও আপেক্ষিক আর্দ্রতা দ্রুত দুর্বল করে করোনাভাইরাসকে। অর্থাৎ যত গরম পড়বে তত প্রকোপ কমবে করোনার। এক মার্কিন আধিকারিক এই দাবি করেছেন।


ওই আধিকারিকের নাম উইলিয়াম ব্রায়ান, তিনি ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটিস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ডিরেক্টরেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান। তিনি বলেছেন, গবেষণায় জানা গিয়েছে, ওই ভাইরাস সব থেকে ভাল থাকে বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে, শুকনো আবহাওয়ায়। আর সব থেকে দ্রুত মারা যায় সরাসরি সূর্যের আলোয় এলে। ফলে করোনার চরিত্রও ইনফ্লুয়েঞ্জার মত অসুখের ধাঁচে হতে পারে, যা উষ্ণ আবহাওয়ায় কম ক্ষতিকর। কিন্তু কথা হল, সিঙ্গাপুরের মত উষ্ণ শহরেও করোনা ঘাতক বলে প্রমাণিত হয়েছে, ফলে প্রশ্ন উঠেছে, আবহাওয়ার তার ওপর আদৌ কোনও প্রভাব আছে কিনা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তাড়াহুড়ো না করে এই গবেষণাপ্রাপ্ত ফলের ওপর সাবধানে কাজ করা উচিত। পাশাপাশি মন্তব্য করেছেন, তিনিই একবার বলেছিলেন, গরম পড়লে করোনা পালাতে পারে। তখন সে কথা কারও ভাল লাগেনি।

উইলিয়াম ব্রায়ান বলেছেন, দেখা যাচ্ছে, স্টেনলেস স্টিলের মত যে সারফেসে কোনও ছিদ্র নেই, তা যদি অন্ধকারে রেখে দেওয়া হয়, তবে তাতে করোনা জীবাণুর অর্ধেক শক্তিক্ষয় হতে ১৮ ঘণ্টা লাগে।  আবার আপেক্ষিক আর্দ্রতা বেশি থাকলে ৬ ঘণ্টায় হয় অর্ধেক শক্তিক্ষয়। আর আর্দ্রতার সঙ্গে যদি সূর্যালোকও জোটে, তবে ওই জীবাণু ২ মিনিটে অর্ধেক দুর্বল হয়ে পড়ে। সর্দি কাশির মাধ্যমে যে জীবাণু ছড়ায়, তা অন্ধকার ঘরে এক ঘণ্টায় অর্ধেক দুর্বল হয়। সূর্যালোকে এই সময় কমে দাঁড়ায় মাত্র ৯০ সেকেন্ড। ব্লিচের বদলে আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল জীবাণু নাশে বেশি কার্যকর বলেও দাবি করেছেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের মতে, বিজ্ঞানীদের উচিত, করোনা রোগীদের ওপর তাঁদের এই গবেষণালব্ধ ফল পরীক্ষা করে দেখা। কোনওভাবে ইঞ্জেকশন দিয়ে শরীরে আলো ঢুকিয়ে বা গোটা শরীর জীবাণুমুক্ত করে দেখা যায় না? প্রশ্ন করেছেন তিনি।

আমেরিকায় ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে করোনা, প্রতিদিন মারা যাচ্ছেন অগুনতি মানুষ। এরই মধ্যে ১৬টি মার্কিন প্রদেশ ঠিক করেছে, লকডাউন তুলে দিয়ে নতুন করে আর্থিক কাজকর্ম চালু করবে তারা। এই সপ্তাহেই খুলে যাচ্ছে জর্জিয়া ও দক্ষিণ ক্যারোলিনার কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এই পদক্ষেপে আশঙ্কা বেড়েছে চিকিৎসকদের, তাঁদের ভয়, এর ফলে করোনা মৃত্যু আরও বাড়তে পারে।

ট্রাম্প সরকারও বলেছে, ২ সপ্তাহ ধরে করোনা সংক্রমণ কমেছে প্রমাণ পেলেই প্রদেশগুলির কাজকর্ম চালু করার কথা ভাবা উচিত। বরং হাসপাতাল ও অন্যান্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হোক, যাতে অস্ত্রোপচার ও অন্যান্যভাবে সরকারের কোষাগারে অর্থ আসতে পারে। করোনা রোগীদের অগ্রাধিকার দিতে বেশ কয়েকটি প্রদেশ অন্যান্য রোগী ভর্তি বন্ধ আমেরিকায় করোনা সংক্রমিত এখনও পর্যন্ত ৮৭৪,০০০-র বেশি মানুষ, প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৫০,০০০।