নয়াদিল্লি: সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল দেশের সর্বোচ্চ আদালতের (Press Freedom)। জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা অনুচিত বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। একটি মলয়ালি খবরের চ্যানেলের সম্প্রচার নিষিদ্ধকরণ মামলায় বুধবার এই রায় শোনানো হল। বলা হয়েছে, সরকারের সমালোচনা করছে বলেই কোনও সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা যায় না (SC Removes Channel Ban)।


একটি চ্যানেলের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণে রাজি হয়নি কেন্দ্রীয় তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রক


একটি মলয়ালি খবরের চ্যানেলের লাইসেন্সের পুনর্বীকরণ ঘিরে বিতর্ক দেখা দেয়। নিরাপত্তা সংক্রান্ত ছাড়পত্রকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে ওই চ্যানেলের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণে রাজি হয়নি কেন্দ্রীয় তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রক। যদিও ওই চ্যানেলের অভিযোগ, সরকারের সমালোচনা করাতেই তাদের উপর কোপ পড়েছে।


সেই মামলার শুনানিতেই বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারকে ভর্ৎসনা করল শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন কেরল হাইকোর্টের রায় খারিজ করে দেয়। শীর্ষ আদালত বলে, “জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে মানুষকে প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দাম্ভিকের মতো আচরণ করেছে।”


২০২০ সালে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলন এবং দিল্লি হিংসার ঘটনার লাগাতার সম্প্রচার করেছিল ওই চ্যানেল।  লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ না করার কারণ হিসেবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জাতীয় নিরাপত্তার দোহাইও দেওয়া হয়। সেই প্রসঙ্গেই এ দিন কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা করল শীর্ষ আদালত।


আরও পড়ুন: Enforcement Directorate: ব্য়াঙ্ক স্টেটমেন্ট ও ইনকাম ট্য়াক্স রিটার্ন কপি-সহ যাবতীয় নথি নিয়ে ED-র মুখোমুখি আসানসোল জেল সুপার


এ দিন আদালত জানায়, কেন ওই চ্যানেলের সম্প্রচার নিষিদ্ধ করা উচিত, তার সপক্ষে যুক্তিযুক্ত কোনও কারণ দেখাতে পারেনি কেন্দ্র। আদালত বলে, “কোনও রকম সন্ত্রাসী সংযোগ উঠে আসেনি। জাতীয় নিরাপত্তার তত্ত্ব হাওয়ায় ভাসিয়ে দিলেই হল না। ওই চ্যানেলে এমন কিছু দেখানো হয়নি যা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলার পরিপন্থী।”


সংবাদমাধ্যমকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষেই কথা বলতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই বলেও এ দিন মন্তব্য করে শীর্ষ আদালত। আদালত জানায়, শুধুমাত্র সরকারের সমালোচনা করে বলেই লাইসেন্স বাতিল করতে হবে, এমন হতে পারে না। শুধু তাই নয় আদালতে বন্ধখামে ব্যাখ্যা জমা দেওয়ার অভ্য়াস নিয়েও এ দিন আদালতে তিরস্কৃত হয় কেন্দ্র। আদালত বলে, “সব তদন্তের রিপোর্টকে গোপন বলে চালানো যায় না। বিশেষ করে যেখানে নাগরিকদের স্বাধীনতার প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে।”


গত বছর ৩১ জানুয়ারি থেকে ওই চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে


যে চ্য়ানেলের সম্প্রচার নিষিদ্ধ হওয়া নিয়ে এই মামলা, সেটির নাম MediaOne. লাগাতার কেন্দ্রীয় সরকারের রোষে পড়েছে ওই চ্যানেল। কেন্দ্রীয় তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রকের অনুমোদন তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ার পর , গত বছর ৩১ জানুয়ারি থেকে ওই চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে। কেরল হাইকোর্টও কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছিল এর আগে। কিন্তু হাইকোর্টের সেই রায় এ দিন খারিজ হয়ে গেল শীর্ষ আদালতে।