জাতীয় নিরাপত্তা আইনে জলবায়ু কর্মী সোনম ওয়াংচুককে আটক করা নিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়ল কেন্দ্র। তাঁর স্ত্রী গীতাঞ্জলি জে ওয়াংমো-কে কেন আগাম নোটিস দেওয়া হয়নি, এই প্রশ্ন তোলে শীর্ষ আদালত। এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হবে ১৪ অক্টোবর। বিচারপতি অরবিন্দ কুমার এবং এনভি আঞ্জারিয়ার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ গীতাঞ্জলির দায়ের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্র, জম্মু ও কাশ্মীর এবং রাজস্থানকে নোটিস জারি করেছে। গীতাঞ্জলি বেঞ্চকে জানিয়েছিলেন যে, ২৬ সেপ্টেম্বর আটকের পর থেকে তাঁকে তাঁর স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না।
৩২ নম্বর ধারার অধীনে দায়ের করা ওয়াংমোর আবেদনটি হল একটি হেবিয়াস কর্পাস আবেদন যা ওয়াংচুকের মুক্তির জন্য করা হয়েছে, যিনি বর্তমানে যোধপুর কারাগারে বন্দী। তাঁর আবেদনে, তিনি ২২ নম্বর ধারার অধীনে সোনমের আটককে অবৈধ বলে চ্যালেঞ্জ করেছেন। বলেছেন যে, তাঁকে বা তাঁর স্বামীকে গ্রেফতারির কারণ জানানো হয়নি।
শুনানির সময়, ওয়াংমোর পক্ষে উপস্থিত আইনজীবী কপিল সিবাল যুক্তি দেন যে, আটকের নোটিসের অনুলিপি না পেলে তাঁরা আটকের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবেন না। তখন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন যে, ওয়াংচুককে আটকের কারণ ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে এবং তাঁকে আটকের পর তাঁর ভাই তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। পাল্টা সিবাল বলেন যে, পরিবারকে কোনও কপি দেওয়া হয়নি এবং তাঁরা কেবল ইন্টারকমের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পেরেছেন। জোর দিয়ে বলেন যে, আটকের কারণ ছাড়া তাঁরা সংশ্লিষ্ট বোর্ডের সামনে যথাযথ প্রতিনিধিত্ব দাখিল করতে পারবেন না। এর পাশাপাশি তিনি অনুরোধ করেন, তাঁর স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হোক ওয়াংমো-কে। এখনও পর্যন্ত যে সুযোগ তাঁকে দেওয়া হয়নি বলে আদালতে জানান সিবাল।
আন্দোলন-অশান্তি-হিংসা-প্রাণহানি-অগ্নিকাণ্ড। লাদাখের রাজধানী লেহ-তে হিংসার ঘটনায়, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুকে কাঠগড়ায় তুলেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএ) অধীনে গ্রেফতার করা হয় সোনম ওয়াংচুককে।
বেশ কয়েক মাস ধরেই আন্দোলন চলছে লাদাখে। লাদাখকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তুলছেন লাদাখবাসী। এই আন্দোলনে যোগ দিয়ে, অনশনে বসেছিলেন আন্তর্জাতিক খ্য়াতিসম্পন্ন পরিবেশ কর্মী সোনম ওয়াংচুক। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলন দমাতে তাঁর বিরুদ্ধেই হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ তুলে, এক বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক দাবি করে, সোনম ওয়াংচুক 'Arab Spring-'র কায়দায় বিক্ষোভে উস্কানি দিয়েছেন।