মুম্বই: সুশান্ত মৃত্যু তদন্তে এবার রিয়া চক্রবর্তী, তাঁর ভাই ও বাবার মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করল ইডি।


এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র দাবি, রিয়ার কাছ থেকে সন্তোষজনক জবাব মেলেনি। তাই অভিনেত্রী, তাঁর ভাই ও বাবার মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে কাদের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ ছিল, তা খতিয়ে দেখা হবে।


তদন্তকারী সংস্থার সূত্রে জানা গিয়েছে, খতিয়ে দেখা হবে ফোনের কললিস্ট। এছাড়া, কার সঙ্গে কতক্ষণ কথা হয়েছে। কার সঙ্গে কতবার মেসেজে কথা, তাও খতিয়ে দেখা হবে।


ইডি সূত্রের খবর, মোট চারটি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে ২টি রিয়ার। একটি ফোন অভিনেত্রীর ভাই সৌভিক ও অপরটি তাঁর বাবা ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তীর। এর পাশাপাশি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ২টি আই-প্যাড এবং একটি ল্যাপটপ।


প্রসঙ্গত, সোমবার সকাল এগারোটা নাগাদ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইডি-র দফতরে পৌঁছোন সুশান্ত সিং রাজপুতের বান্ধবী এবং অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী। রিয়াকে প্রায় দশ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি-র অফিসাররা। রাত ন’টা নাগাদ ইডি-র অফিস থেকে বেরোন তিনি।


সুশান্ত মৃত্যু তদন্তে সোমবার রিয়া এবং তাঁর ভাই ছাড়াও ইডি-র অফিসাররা জিজ্ঞাসাবাদ করেন রিয়ার বাবা ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী এবং বিজনেস ম্যানেজার শ্রুতি মোদিকেও।


গতকাল রিয়া চক্রবর্তীর বিজনেস ম্যানেজারকে নথি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আজও শ্রুতি মোদিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। পাশাপাশি, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ ইডি দফতরে তলব করা হয় সুশান্তের রুমমেট সিদ্ধার্থ পিঠানিকেও।


এর আগে শুক্রবার প্রায় ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। এছাড়া, শনিবার বেলা থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ২২ ঘণ্টা জেরা করা হয় রিয়ার ভাই সৌভিককে।


সুশান্ত সিং রাজপুতের বাবা রিয়ার বিরুদ্ধে ১৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার যে অভিযোগ তুলেছেন, তারই তদন্ত চালাচ্ছে ইডি। যদিও, এই কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে দাবি, সুশান্তের অ্যাকাউন্টে ১৫ কোটি টাকা থাকার কোনও তথ্য মেলেনি।


সুশান্তের বাবা যে অ্যাকাউন্টের উল্লেখ করেছেন, তাতে সাড়ে চার কোটির কিছু বেশি টাকা ছিল। সুশান্তের মৃত্যুর সময় অ্যাকাউন্টে ২ কোটির সামান্য কিছু বেশি টাকা ছিল। সব মিলিয়ে সুশান্তের কাছে মোট প্রায় ১০ কোটি টাকা ছিল বলে জানা গিয়েছে।


ইডি সূত্রে খবর, রিয়ার ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের আয়কর রিটার্ন তাদের হাতে এসেছে। যেখানে দেখা গিয়েছে, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে রিয়ার আয় ছিল ১৮ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে ১৮ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা।


তবে এই সময়ে রিয়ার স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৯৬ হাজার ২৮১ টাকা থেকে বেড়ে হয় ৯ লক্ষ ৫ হাজার ৫৯৭ টাকা। অর্থাৎ দু’বছরে স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ বাড়ে দশগুণ। এই সময়ে বিভিন্ন সংস্থায় শেয়ার হোল্ডার ফান্ডের পরিমাণও ৩৪ লক্ষ ৫ হাজার ৭২৭ টাকা থেকে বেড়ে হয় ৪২ লক্ষ ৬ হাজার ৩৩৮ টাকা। এই দু’বছরে রিয়ার অ্যাকাউন্টে বড় লেনদেন এখনও নজরে আসেনি বলেই ইডি সূত্রে দাবি।


অন্যদিকে, রিয়া চক্রবর্তীও সুপ্রিম কোর্টে নতুন করে হলফনামা দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, আদালতের রায় বেরনোর আগেই তাঁকে দোষী প্রমাণিত করার চেষ্টা হচ্ছে। রাজনৈতিক স্বার্থচরিতার্থ করার জন্য বলির পাঁঠা করা হচ্ছে। ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে ক্রমাগত চাপ তৈরি করা হচ্ছে ।


সিবিআই যে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে এই মামলার তদন্ত করছে, তার প্রমাণ হল সুশান্তের মৃত্যু খতিয়ে দেখতে গঠিত স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম!