বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: দল চাইলে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে রাজি তিনি। নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ককে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন নন্দীগ্রামের মা তথা পাঁশকুড়া পশ্চিমের তৃণমূল বিধায়ক ফিরোজা বিবি। আর এই নিয়ে শাসকদলকে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি।
শুভেন্দুর দলত্যাগের সিদ্ধান্তে বেজায় ক্ষুব্ধ ‘নন্দীগ্রামের মা’ নামে পরিচিত ফিরোজা বিবি। ২০০৭ সালের ১৪ই মার্চ জমি আন্দোলনে অংশ নিয়ে প্রাণ হারান ইমদাদুল ইসলাম। ২০১১ সালে ইমদাদুলের মা ফিরোজা বিবিকে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে প্রার্থী করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিপুল ভোটে জয়ী হন ফিরোজা। কিন্তু পরে তাঁকে মন্ত্রী করার জন্য নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে শুভেন্দুকে প্রার্থী করেন মমতা।
আর ২০১৬ এর বিধানসভা নির্বাচনে পাঁশকুড়া পশ্চিম থেকে লড়ে ফের বিধায়ক হন ফিরোজা।
নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় শুভেন্দু ছিলেন অত্যন্ত সক্রিয়। ফিরোজা বিবির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছেন তিনি। শুভেন্দুকে নিজের ছেলের মতোই মনে করতেন ফিরোজা। কিন্তু সেই শুভেন্দুই এখন বিজেপিতে। তাই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এবার নন্দীগ্রামে ভোটে লড়তে রাজি নন্দীগ্রামের মা। ফিরোজা স্পষ্ট বলেছেন, দল যদি চায়, তাহলে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে তিনি রাজি। এমনকী শুভেন্দু কোনও মহারথী নন, দলের নেতা ছিলেন তাই সম্পর্ক ছিল, এমন কথাও বলেছেন ফিরোজা। সেইসঙ্গে জানিয়েছেন, এখন শুভেন্দু বিরোধী শিবিরে, তাই দাঁড়াতে রাজি। তাঁর অভিযোগ, নন্দীগ্রামে আন্দোলনকারীদের ভুলে গিয়েছেন শুভেন্দু। শুভেন্দুকে মানুষ আশীর্বাদ করেছিল, এখন তা অভিশাপ হয়েছে।
যদিও তৃণমূল বিধায়কের এই চ্যালেঞ্জকে আমল দিচ্ছেন না বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি প্রলয় পাল। তিনি বলেছেন, ফিরোজা বিবি শহিদ জননী হিসেবে প্রণম্য, উনি আগে রাজনীতির বিষয়ে ছিলেন না। শুভেন্দু বটবৃক্ষ ছিলেন বলেই তিনি আজ বিধায়ক হয়েছেন, তৃণমূলের যদি চ্যালেঞ্জ নিতে হয়স তাহলে সরাসরি শুভেন্দুর বিরুদ্ধে মমতা দাঁড়ান, তা না করে শহিদ পরিবারকে নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে!
শেষ পর্যন্ত কি নন্দীগ্রামের মায়ের সঙ্গে নন্দীগ্রামের আন্দোলনের কান্ডারির লড়াই দেখা যাবে? সময়ই তার উত্তর দেবে।