কান্দাহার: গাড়িতে হাত বেঁধে মারধরের দৃশ্য ভাইরাল হয়েছিল আগেই। মেরেও ফেলা হয় আফগানিস্তানের কমেডিয়ান খাসা জওয়ানকে। তবে প্রথমে এই হত্যার দায় নেয়নি তালিবান। পরে এর দায় মুখপাত্রের মারফত নিল তালিবান জঙ্গিরা।
গত সপ্তাহেই ভাইরাল হয়েছিল খাসার ভিডিও। একটি গাড়িতে হাত বেঁধে খাসাকে নিয়ে যাচ্ছিল তালিবানরা। গাড়ির মধ্যেই ক্যামেরা দেখে কিছু বলতে যান তিনি। এরপরই তাঁকে সপাটে চড় মারতে থাকে তালিবানিরা। জোর করে বসিয়ে দেওয়া হয় সিটে। আফগানিস্তানের কৌতুক অভিনেতার এই হাল দেখেছিল সারা বিশ্ব। তখন থেকেই শুরু হয়ে যায় মৃত্যুর দিন গোনা।
অবশেষে সংবাদ সংস্থা এএফপিকে তালিবানি মুখপাত্র জবিহুল্লা মুজাহিদ জানিয়েছে, ফজল মহম্হদ ওরফে খাসা জওয়ান কোনও কৌতুক অভিনেতা ছিলেন না। তালিবানের বিরুদ্ধে একাধিক যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। পুলিশকর্মী হিসাবে সক্রিয় ছিলেন খাসা। ওঁর জন্য বহু লোকের মৃত্যু হয়েছে। এমনকী ধরা পড়ার সময় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি। বার বার তাঁকে মেরে ফেলার কথা বলছিলেন খাসা।
দু'সপ্তাহ আগেই আফগানিস্তানের কৌতুক অভিনেতা খাসাকে অপহরণ করে তালিবানিরা। আফগানিস্তানে মজার ভিডিও পোস্ট করতেন দক্ষিণ কান্দাহারের এই পুলিশ অফিসার। ফজল আহমেদ নাম হলেও কমেডির জন্য 'খাসা জওয়ান' নামে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কান্দাহারে ডিউটি থেকে বাড়ি ফেরার সময় তাঁকে অপহরণ করে তালিবানিরা। পরে সেই ভিডিও ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আফগান কৌতুক অভিনেতার এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তাঁর সহকর্মীরা। এ প্রসঙ্গে আফগান পুলিশের কমান্ডার সয়লাব জানিয়েছেন, খাসাকে কখনও সরাসরি যুদ্ধে পাঠানো হয়নি। উনি চেকপয়েন্ট অফিসারদের কাছে বিনোদনের মানুষ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন। এদিকে খাসার এই মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, খাসার মতো নিরীহ মানুষকে যারা হত্যা করতে পারে, তারা পৃথিবীর সবথেকে নিষ্ঠুরতম ব্যক্তি।
আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বলছে, দেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ছে তালিবানিদের। বহু জায়গা প্রশাসনের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে এই জঙ্গি গোষ্ঠী। তালিবানি শাসনে বিনোদনের ওপর আগেই জারি হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা। কমেডিয়ানের মৃত্যুর পর সেই নিষেধাজ্ঞায় এবার সিলমোহর পড়ল।