দুবাই: সোস্যাল মিডিয়া পোস্টে ইসলামোফোবিয়া অর্থাত ইসলাম অবমাননার জেরে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে চাকরি থেকে ছাঁটাই বা সাসপেন্ড আরও তিন প্রবাসী ভারতীয়। এই ধরনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই প্রায় আধ ডজন ভারতীয়ের ওপর শাস্তির খাঁড়া নেমেছে।
গত ২০ এপ্রিল আমিরশাহিতে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত পবন কপূর প্রবাসী ভারতীয়দের সোস্যাল মিডিয়ায় এধরনের পোস্ট করা থেকে বিরত থাকতে বলে সাবধান করে ট্যুইটে লেখেন, ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি কোনও ধরনের বৈষম্য না করার নীতি, মূল্যবোধে বিশ্বাস করে। বিভেদ-বিভাজন আমাদের নৈতিক কাঠামো, আইনের শাসনের পরিপন্থী। আমিরশাহির প্রবাসী ভারতীয়দের সবসময় এটা মাথায় রাখা উচিত।
কিন্তু তারপরও সোস্যাল মিডিয়ায় বিভেদমূলক পোস্টের উল্লেখ করে দি গাল্ফ নিউজ বলেছে, ভারতীয় দূতাবাসের হুঁশিয়ারি বৃথাই গেল বলে মনে হয়। সোস্যাল মিডিয়ায় ইসলামবিদ্বেষী পোস্টের জেরে সাজার মুখে পড়া প্রবাসী ভারতীয়দের তালিকাটা বড় হচ্ছে। এ সপ্তাহের শেষে অন্তত আরও ৩ ভারতীয়কে ছাঁটাই বা সাসপেন্ড করা হয়েছে সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা ওদের আপত্তিকর পোস্ট নিয়োগকারীদের নজরে আনার পর।

দুবাইয়ে অভিজাত ইতালিয় রেস্তোঁরা চেনের পরিচালনাকারী আজাদিয়া গোষ্ঠীর এক মুখপাত্র শেফ রাওয়াত রোহিতকে সাসপেন্ড করার খবর নিশ্চিত করে তাঁর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন। স্টোরকিপার সচিন কিন্নিগোলিকে পরবর্তী নোটিস পর্যন্ত সাসপেন্ড করেছে শারজার নিউমিক্স অটোমেশন। সংস্থার মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ওঁর বেতন আটকে দিয়ে কাজে আসতে বারণ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তের অধীন। আমরা জিরো-টলারেন্স নীতি নিয়েছি। কোনও ধর্মের প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষ পোষণ বা দেখানোয় দোষী সাব্য়স্ত হলে তার ফল ভুগতে হবে।

দুবাইয়ের ট্রান্সগার্ড গোষ্ঠী জানিয়েছে, বিশাল ঠাকুর নাম ব্যবহার করে নিজের ফেসবুক পেজে একাধিক ইসলাম-বিরোধী মেসেজ পোস্ট করায় তাদের এক কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঘরোয়া তদন্তের পর তাঁর আসল পরিচয় সামনে আসে, তাঁর নিরাপত্তা সংক্রান্ত রক্ষাকবচ বাতিল হয়, চাকরি থেকে বরখাস্ত করে কোম্পানির নীতি অনুসারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে তাঁকে তুলে দেওয়া হয়। তিনি দুবাই পুলিশের হেফাজতে আছেন।
আমিরশাহির প্রাক্তন, বর্তমান ভারতীয় রাষ্ট্রদূতরা সেখানকার প্রবাসী ভারতীয়দের সেদেশের কঠোর ঘৃণা-বিদ্বেষমূলক ভাষণ বিরোধী আইন সম্পর্কে সাবধান করেছেন। উপসাগর দুনিয়ার অন্য সব দেশের ভারতীয় দূতাবাসগুলিও একই ধরনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
গত মাসে একটি মুসলিম ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ইঙ্গিত করে লেখা কবিতায় ‘অনিচ্ছাকৃত ভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে’ ক্ষমা চাইতে হয় শারজার ব্যবসায়ী সোহন রায়কে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দিল্লির এক পড়ুয়াকে তাঁর মতামতের জন্য সোস্যাল মিডিয়ায় হুমকি দেওয়ায় মার্চে শেফ ত্রিলোক সিংহকে ছাঁটাই করে দুবাইয়ের এক রেস্তোরাঁ।