নয়াদিল্লি: নয় নয় করে দু'মাসেরও বেশি সময় ধরে জ্বলছে মণিপুর (Manipur Violence)। তার আঁচ ছড়িয়েছে গোটা দেশেই। কিন্তু দেশের সংসদে যাতে মণিপুরের প্রসঙ্গই না ওঠে, তার জন্য ইচ্ছাকৃত ভবে বিজেপি অধিবেশন নিয়ে ঢিলেমি করছে বলে এবার গুরুতর অভিযোগ উঠল। অভিযোগ করলেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন (Derek O'Brien)। শুধু তাই নয়, সংসদে রেকর্ড থেকে তাঁর বক্তব্যে থাকা মণিপুর শব্দটি পর্যন্ত বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন।
মণিপুরের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যেই ২০ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে সংসদের বাদল অধিবেশন। কিন্তু মণিপুর প্রসঙ্গে বিক্ষোভের জেরে বার বার গোঁত্তা খেয়েছে অধিবেশন। সেই নিয়েই বিজেপি-কে কাঠগড়ায় তুলেছেন ডেরেক। ট্যুইটারে তিনি লেখেন, 'বিজেপি-ই সংসদকে থামিয়ে দিচ্ছে। সোমবার সকাল ১১টায় মণিপুর নিয়ে সংসদে আলোচনা হোক দেখি। প্রধানমন্ত্রীকেই সিদ্ধান্ত নিতে দিন যে কোথায় আলোচনা হবে, লোকসভা না রাজ্যসভা। অবশ্যই তাতে অংশ নেব আমরা'।
সংসদে তাঁর বক্তব্য থেকে মণিপুর এবং প্রধানমন্ত্রীর উল্লেখকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ ডেরেকের। সেই নিয়ে রাজ্যসভাতেও সরব হন তিনি। প্রধানমন্ত্রীকে মণিপুর নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে বলে সংসদে দাবি জানিয়েছিলেন ডেরেক। কিন্তু তাঁর বক্তব্য থেকে 'মণিপুর' এবং 'প্রধানমন্ত্রী' শব্দ দু'টি বাদ দেওয়া হয়েছে। সেই নিয়ে ট্যুইটারে ডেরেক লেখেন, 'পার্লামেন্টেও সেন্সর। সংসদে মণিপুর নিয়ে মুখ খুলুন প্রধানমন্ত্রী, এটুকু বলেছিলাম। এর মধ্যে অসংসদীয় কী রয়েছে? কেন আমার বক্তব্যে কাটছাঁট করা হল?'
মণিপুর প্রসঙ্গে একযোগে কেন্দ্রকে নিশানা করে চলেছেন বিরোধীরা। সংসদেও সেই নিয়ে আলোচনা চেয়ে সরব সকলে। সরকারের তরফে আলোচনার আশ্বাস দেওয়া হয় যদিও। শুক্রবার রাজনাথ সিংহ জানান, সরকার আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তাতে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতিও দাবি করেন বিরোধীরা। কিন্তু সংসদে এখনও পর্যন্ত মণিপুর নিয়ে আলোচনা হয়ে ওঠেনি। যদিও বিজেপি-র দাবি, বিরোধীরাই সংসদের অধিবেশনে বিঘ্ন ঘটাচ্ছেন। তাই আলোচনা সম্ভব হচ্ছে না। তাতেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠলেন ডেরেক।
গত দু'মাসেরও বেশি সময় ধরে হিংসার আগুনে জ্বলছে মণিপুর। এখনও পর্যন্ত শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন সেখানে। ঘরছাড়া প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। এর পাশাপাশি, লুঠ, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কমতি নেই। চলছে নারী নির্যাতন, ধর্ষণের ঘটনাও। সংসদের বাদল অধিবেশনের আগে মণিপুরের ভাইরাল ভিডিও-র ঘটনাকে ১৪০ কোটি দেশবাসীর লজ্জা বলে উল্লেখ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তাঁর সরকারের ব্যর্থতার দায় কেন ১৪০ কোটির ঘাড়ে বর্তাবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা।