কলকাতা: ভবানীপুরের বিধায়ক পদে ইস্তফা দিলেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এদিন বিধানসভায় গিয়ে অধ্যক্ষর হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দিলেন তিনি। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে গিয়ে ইস্তফাপত্র তুলে দেন তিনি।  সেখানে ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সুব্রত বক্সির মতো তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। 
উল্লেখ্য, নতুন তৃণমূল মন্ত্রিসভায় কৃষিমন্ত্রী হয়েছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বিধায়ক পদ থাকলেও মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেননি তিনি। যদিও সংবিধানে এ ব্যাপারে কোনও বাধ্যবাধ্যকতা নেই। বিধায়ক পদ ছাড়লেও ছয়মাস পর্যন্ত মন্ত্রী থাকতে পারেন তিনি।
যদিও জল্পনা চলছে যে, শোভনদেবকে এবার রাজ্যসভার সদস্য করতে পারে তৃণমূল। দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল বিধায়ক শোভনদেব। রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব এর আগেও সামলেছেন তিনি। এবার তাঁকে বিদ্যুৎমন্ত্রকের পরিবর্ত কৃষিমন্ত্রী করা হয়েছে। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর আসনে মর্যাদার লড়াইয়ে দলের মান রেখেছেন তিনি। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড় হিসেবে পরিচিত ভবানীপুরে বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষের বিরুদ্ধে অনায়াস জয় পেয়েছেন। এই আসন থেকে তিনি পদত্যাগ করায় সেখানে উপনির্বাচন হবে। এই উপনির্বাচনে পুরানো আসন থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী হবেন বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। 


পদত্যাগের পর শোভনদেব জানিয়েছেন, তিনি স্বেচ্ছায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছয়মাসের মধ্যে বিধানসভায় নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। এ কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন  তিনি। 


এবারের ভোটে তৃণমূল বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছে তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও এই সাফল্যের মধ্যেও পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম বিধানসভায় হেরে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  এবার ২১৩ আসনে জিতে ক্ষমতায় ফিরেছে তৃণমূল। তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়ম অনুযায়ী, ছয়মাসের মধ্যে বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হতে হবে তাঁকে। শোভনদেব ভবানীপুর আসন থেকে ইস্তফা দেওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপনির্বাচনে কোন আসন থেকে লড়বেন, তা নিয়ে জল্পনার অবসান হল বলে মনে করা হচ্ছে।
এবার দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে মন্ত্রী করা যায়নি। সে কথা নিজেও জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অবস্থায় জল্পনা চলছে যে, শোভনদেবকে রাজ্যসভার সদস্য করতে পারে তৃণমূল। রাজ্যসভায় এই মুহূর্তে তৃণমূলের দুটি আসন খালি রয়েছে। তাঁর একটিতে শোভনদেবকে রাজ্যসভার সদস্য করা হতে পারে। অন্য কাউকে কৃষিমন্ত্রী করা হতে পারে। যদিও এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কিছু জানা যায়নি। শোভনদেব মন্ত্রিসভা থেকেও ইস্তফা দেননি। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেবেন। 


 যদিও এ ব্যাপারে প্রশ্নের জবাবে  শোভনদেব বলেছেন, এই মুহূর্তে তাঁর রাজ্যসভায় যাওয়ার ইচ্ছে নেই।তবে তিনি বলেছেন, এ সমস্ত বিষয়ে দলই সিদ্ধান্ত নেবে।