কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: বিধানসভা ভোটের মুখে টোলকে শিক্ষার মূল স্রোতে ফেরাল রাজ্য। রাজ্যের ৪২১টি টোল পুনরুদ্ধার করে শুরু হল পরীক্ষার তোড়জোড়। পণ্ডিতদের সঙ্গে বৈঠকের পর ঘোষণা সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের।


হীরকরাজ্যে ছিল উদয়ন পণ্ডিতের পাঠশালা। প্রসন্ন মাস্টারের পাঠশালায় পড়তে যেত ছোট্ট অপু।  পুরনো শিক্ষা ব্যবস্থার অনেকটা অংশ জুড়ে ছিল এইসব পাঠশালা বো টোল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে হারিয়ে গিয়েছিল তাদের জৌলুষ। এ রাজ্যেও বেহাল হয়ে পড়েছিল সব টোল। ভোটের মুখে সেই সব লুপ্তপ্রায় টোলকে ফিরিয়ে আনছে রাজ্য।

রাজ্যে টোলের সংখ্যা ৪২১। ৭ হাজার ৩৫৮টাকা করে ভাতা পান ৫০৯ জন পণ্ডিত। কিন্তু ২০০৮ সাল থেকে কোনও পরীক্ষা হয়নি টোলগুলিতে। এই প্রেক্ষাপটে টোল পুনরুদ্ধার করে শুরু হল পরীক্ষার তোড়জোড়। শুক্রবার এনিয়ে পণ্ডিতদের সঙ্গে বৈঠক করেন সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য।

সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক সমতুল ‘আদ্য’ ও ‘মধ্য’ পরীক্ষা নেওয়া হবে। আবেদনপত্র আগামী সপ্তাহ থেকে দেওয়া হবে। বিচ্ছিন্ন টোলগুলি এতদিন ছিল বঙ্গীয় সংসৃত্ক সাহিত্য পরিষদের অধীন। সরকার ইতিমধ্যেই সব টোলকে সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এনেছে। বঙ্গীয় সংস্কৃত সাহিত্য পরিষদকেও আনা হয়েছে এক ছাতার তলায়।

তৃণমূল সরকার কয়েক বছর আগে নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ির নেতৃত্বে সংস্কৃক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যায় কমিশন তৈরি করে। সেই কমিশনের রিপোর্টে টোল পুনরুজ্জীবনের সুপারিশ করা হয়। পুরাণবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ির কথায়, এগুলো আগে থেকেই সুপারিশ করেছিলাম। পুরনো টোল থাকা দরকার। বিধানসভা ভোটের আগে মনীষীদের নামের পাশাপাশি বঙ্গ রাজনীতির অঙ্গ হয়ে উঠেছে পুরনো সংস্কৃতি। নরেন্দ্র মোদি থেকে অমিত শাহর মুখে শোনা যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, বিদ্যাসাগরের নাম। উঠে আসছে রামায়ণ-মহাভারতের কথা। এই প্রেক্ষিতেই কি টোল নিয়ে কৌশলী পদক্ষেপ তৃণমূলে সরকারের? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলের একাংশে।