কলকাতা : কাজ হোক বা চিকিৎসা, বাঙালির দক্ষিণ ভারতে যাওয়ার অন্যতম লাইফলাইন। হাওড়ার শালিমার থেকে তামিলনাড়ুর চেন্নাইকে রেলপথে জোড়ার অন্যতম কারিগর করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express Derailed)। ভারতে রেল দুর্ঘটনার ইতিহাসে ভয়াবহতা, মৃত্যুমিছিলের বিচারে অন্যতম বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে শুক্র সন্ধেয় পড়েছে শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। তবে এই প্রথম নয় ! ৪৬ বছরের পুরনো ট্রেনটির দুর্ঘটনা-ইতিহাসের খতিয়ান বেশ লম্বা।
১৯৭৭ সালে ভারতীয় রেলে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাত্রা শুরু করেছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। প্রায় ২৬ ঘণ্টা সময় নিয়ে ১৪ টি বিরতি সঙ্গী করে শালিমরা থেকে চেন্নাইয়ে পৌঁছয় ট্রেনটি। প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটারের বেশি দূরত্ব পেরিয়ে কাজের জন্য বা চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ ভারতে যেতে দৈনিক এই এক্সপ্রেস ট্রেনের ওপর আস্থা রাখেন অনেক বাঙালিই।
এর আগে তিনবার বড় ও বেশ কয়েকবার ছোটখাট দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express Accident)। তবে এবারের দুর্ঘটনা ভয়াবহতার বিচারে ছাপিয়ে গিয়েছে সব। বালেশ্বরের কাছে বাহানাগা বাজার স্টেশনে ঘটা দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৬১ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে, আহত অন্তত ৬৫০। এখনও দুর্ঘটনাগ্রস্ত কামরা থেকে বের করা হচ্ছে দেহ। মৃত ও আহতর সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা।
এর আগে ২০০২ সালের ১৫ মার্চ করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সাতটি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছিল। তৎকালীন হাওড়া-চেন্নাই করমণ্ডল নেল্লোরের একটি রেলব্রিজে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। আহত হয়েছিলেন প্রায় ১০০ যাত্রী। ট্রেন লাইনের অবস্থা খারাপ হওয়া সেবার কারণ হিসেবে সামনে উঠে এসেছিল।
২০০৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি করমণ্ডলের দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্তত ১৫ জন। আহত একাধিক একাধিক। ভুবনেশ্বর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে জাজপুর কেঞ্ঝোরে যে দুর্ঘটনায় ঠিক কী কারণে ট্রেনের কামরাগুলি লাইনচ্যুত হয়েছিল, সেই খোঁজ অবশ্য পাওয়া যায়নি।
২০১২ সালের ১৪ জানুয়ারি করমণ্ডল এক্সপ্রেসের যাত্রার মাঝে আগুন লেগে গিয়েছিল ট্রেনে। যদিও সৌভাগ্যবশত সেই ঘটনায় হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি। সেই বছরেরই ৩০ ডিসেম্বর গতিময় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ধাক্কায় মারা পড়েছিল কয়েকটি হাতি। পাশাপাশি ২০১৫ সালে ১৮ এপ্রিলও আরও একবার আগুন লেগে গিয়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেসে।
আরও পড়ুন- 'করমণ্ডলের রুটে ছিল না কবচের সুবিধা', উঠে এল তথ্য ! কী এই দুর্ঘটনারোধী ‘কবচ’
ওড়িশার বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ ঘিরে ধোঁয়াশা জারি রয়েছে। কী ভাবে দুর্ঘটনার কবলে পড়ল ৩টি ট্রেন, বাড়ছে রহস্য।
আরও পড়ুন: আমের পরে ঠান্ডাপানীয় খেলে সত্যিই বিপদ? না কি শুধুই রটনা?