হাওড়া : সময় যত এগোচ্ছে ততই বাড়ছে ততই ক্রমশ বাড়ছে মৃত-আহতের সংখ্যা। চারিদিকে শুধু কান্না, মৃত্যু, হাহাকার। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে চলছে উদ্ধারকাজ। ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে শালিমার-হাওড়া করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express Derailed)। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের মোট ১৫ টি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে। আপাতত শেষ পাওয়া খবরে অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ২০০-র বেশি। যদিও প্রত্যক্ষদর্শী ও ট্রেনযাত্রীদের আশঙ্কা, শয়ে শয়ে দুর্ভাগ্যের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ঠিক কীভাবে ঘটল এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ?


রেল সূত্রে পাওয়া শেষ খবর, প্রথমে বেঙ্গালুরু-হাওড়া এক্সপ্রেসে (Bengaluru-Howrah Express) ধাক্কা মারে গতিতে এগোন শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Shalimar-Chennai Coromandel Express)। দুই ট্রেনের সংঘর্ষের পরে করমণ্ডলের একাধিক কামরা পাশের লাইনে দাঁড়ানো মালগাড়ির ওপর গিয়ে পড়ে। কার্যত দেশলাইয়ের বাক্সের মতো উল্টে যায় একের পর এক কামরা। মালগাড়ির ওপরে উঠে যায় করমণ্ডলের ইঞ্জিন। 


বালেশ্বরের বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে ঘটে দুর্ঘটনা। সন্ধে ৭ টা নাগাদ ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে বলেই জানা গিয়েছে। প্রথমে ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া এক্সপ্রেসের ২ টি কামরা কীভাবে লাইনচ্যুত হল, তা অবশ্য জানা যায়নি। ঘুটঘুটে আন্ধকারের মধ্যে লাইনচ্যুত হওয়া কামরাগুলিতে এসে করমণ্ডল ধাক্কা মারার পরই ঘটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। সামনের দিক থেকে মোট ১৫ টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। 


ধাক্কা মারার অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে করমণ্ডলের লাইনচ্যুত কামরাগুলি পাশে দাঁড়ানো মালগাড়ির ওপরে উঠে যায়। দেশলাইয়ের খোলের মতো উল্টে পাল্টে তা পাশে ছিটকে পড়ে। প্রবল আওয়াজ শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। তাঁরাই প্রথমে উদ্ধারকাজে হাত লাগান। যারপর একে একে সেখানে পৌঁছয় বিভিন্ন উদ্ধারকারী দল। আহতদের উদ্ধার করে পাঠানো শুরু হয় বিভিন্ন হাসপাতালে।


আরও পড়ুন- 'চারিদিকে রক্ত, মৃত্যু, হাহাকার', শয়ে শয়ে মৃত্যুর আশঙ্কা প্রত্যক্ষদর্শী, ট্রেনযাত্রীদের


গ্যাস কাটারের সাহায্যে বিভিন্ন ট্রেনের কামরা কেটে বের করে আনা হয় আহতদের। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, কারোর মাথা ফেটেছে তো কারোর হাত কেটে ঝুলছে, আবার খানিক এগোলেই দেখা গিয়েছে মৃতদেহের সারি। সবমিলিয়ে মৃত্যুমিছিলের মাঝে যেন জলজ্ব্যান্ত নরক হয়ে উঠেছিল গোটা এলাকা। আর কামরাগুলো থেকে শুধু ভেসে আসছে আর্তদের আর্তনাদ।


আরও পড়ুন-LHB কামরা ছিল না করমণ্ডল এক্সপ্রেসে! সেই কারণেই কি মৃত্যুমিছিল?


ইতিমধ্যে যাঁরা দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন তাঁদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা, গুরুতর জখমদের জন্য ২ লক্ষ টাকা এবং সামান্য জখমদের জন্য ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো।


আরও পড়ুন: আমের পরে ঠান্ডাপানীয় খেলে সত্যিই বিপদ? না কি শুধুই রটনা?