রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: ভ্যাকসিনের সঙ্গে উপরি পাওনা গাছ। বিশ্বএমনই অভিনব ছবি দেখা গেল জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি পুরসভা এলাকায়। পুরসভা ও প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
আধুনিক সভ্যতা গিলে খাচ্ছে সবুজকে। নানা অসুখ আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরছে পৃথিবীকে। করোনাকালে অক্সিজেনের সঙ্কট যেন বারবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে। নগরায়ণের ঝোঁকে নিজের জ্ঞানে-অজ্ঞানে কী ক্ষতি মানুষ নিজের করেছে। ক্যালেন্ডারে আরও একটা পরিবেশ দিবস। শনিবার সেই উপলক্ষ্যে এক সুতোয় বাঁধা পড়ল করোনার ভ্যাকসিনেশন আর সবুজের উৎসব।
জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি পুরসভা এলাকায় এদিন প্রবীণদের ভ্যাকসিনেশনের পর হাতে তুলে দেওয়া হল গাছের চারা। পুরসভা ও প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বাসিন্দারা। ধূপগুড়ির এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, গাছ পেয়ে ভাল লাগছে, অক্সিজেন পাব, গাছ লাগাব, ভাল উদ্যোগ । এদিন বৃক্ষরোপনও করা হয় পুরসভা এলাকা।
ধূপগুড়ি পুরসভা ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ সিংহ জানিয়েছেন, এখন চারিদিকে অক্সিজেন সঙ্কট। অক্সিজেন যেন পায়, একটা করে গাছ দিচ্ছি। ধূপগুড়ির ব্লক মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, সুরজিত ঘোষ সাধুবাদ জানিয়ে বলেছেন এএই সময়ে ভাল উদ্যোগ। এই অশান্ত-অসুস্থ এটুকুই যেন আর্তি। অভিনব এই উদ্যোগকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
কয়েকদিন আগেই ঘূর্ণিঝড় ইয়াস তছনছ করে দিয়ে গেছে বঙ্গের একাংশের সবুজকে। গত বছরে আমপানের তাণ্ডবে কলকাতায় প্রায় ১৫ হাজার গাছ উপড়ে গিয়েছিল, রাজ্যেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে ফের তছনছ সবুজ। পুনরায় তা ফেরানোটা কার্যত একটা চ্যালেঞ্জ। আর এই পরিস্থিতিতেই ধূপগুড়ির এই উদ্যোগ প্রশংসা কুড়িয়েছে সকলের।
উল্লেখ্য, টানা লকডাউনে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হেলথ বুলেটিন। শনিবার রাজ্যে একদিনে করোনা আক্রান্ত ৭ হাজার ৬৮২। রাজ্যে একদিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৬,১৫২ জন। এই একদিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৬ হাজারের বেশি মানুষ। সবমিলিয়ে এথনও পর্যন্ত করোনামুক্ত হয়েছেন ১৩,৫৮,৫৩৭ জন।
গত বেশ কয়েকদিনের মতোই রাজ্যের মধ্যে করোনা সংক্রমিত ও মৃতের সংখ্যার নিরীখে শীর্ষে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগণা। উত্তর ২৪ পরগণায় একদিনে সংক্রমিত ১৬৬৪, ২৮ জনের মৃত্যু। কলকাতায় একদিনে সংক্রমিত ৭৮৬, ২৩ জনের মৃত্যু। শনিবারের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে পরীক্ষা হয়েছে সাড়ে ৭২ হাজারের বেশি। রাজ্যে সংক্রমণের হার ১১ শতাংশের কম।