প্রসেনজিৎ সাহা, আগরতলা: বিধানসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরেই অগ্নিগর্ভ ত্রিপুরা (Tripura)। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই আক্রান্ত সিপিএম-বিজেপির সমর্থকরা। সিপাহিজলার বিশালগড়ে বাড়িতে ঢুকে বিজেপি কর্মীকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাতের অভিযোগ সিপিএমের বিরুদ্ধে। পাল্টা বিশালগড়েক অরবিন্দ নগরে সিপিএম সমর্থকের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে। চড়িলামে রাতভর সন্ত্রাস, বিরোধীদলের মিছিলে যাওয়ায় বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে, পাল্টা বিজেপি কর্মীদের হামলার অভিযোগ। মান্দাইয়ে বিজেপি কর্মীদের বাড়ি-বাইক ভাঙচুরের অভিযোগ। খয়েরপুরে মেখলিপাড়ায় বাম কর্মীদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে।



গণনার দিন থেকেই অশান্তি...
বস্তুত ত্রিপুরায় অশান্তি চলছে বিধানসভায় ভোটগণনার দিক থেকেই। দক্ষিণ ত্রিপুরার শান্তিরবাজার  বিধানসভা কেন্দ্রে গণনা চলাকালীনই তিপ্রামথা সমর্থকদের সঙ্গে বিজেপি সমর্থকদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। ওই কেন্দ্রে বিজেপি সমর্থক এগিয়ে ছিল। তিপ্রামথা কর্মী-সমর্থকরা জানাচ্ছেন, একদিকে তাঁদের জন্য জায়গা বরাদ্দ ছিল। অন্য দিকে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের জন্য জায়গা রাখা থাকে। কিন্তু অভিযোগ, যেখানে তাঁদের দাড়ানোর জায়গা ছিল সেখানে গিয়েই পিছন থেকে ইট-পাটকেল মারতে শুরু করেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। তার পরই সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। যেখানে গণনা চলছিল, তার ভিতরেই ঢুকে পড়ে অশান্তি। কেন্দ্রীয় বাহিনী লাঠিচার্জ করে তাঁদের বের করে দেয়। ফলে সব মিলিয়ে গণনাকেন্দ্রের ভিতরে খুব বেশি উত্তাপ ছড়াতে পারেনি। 


ফলাফল...
গত কাল উত্তেজনার ওঠাপড়ার পর দ্বিতীয়বার ত্রিপুরায় ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি । তবে কমেছে বিজেপি-IPFT জোটের আসন সংখ্যা। ১৩ আসনে জেতা তিপ্রামথা জানিয়েছে, বিজেপি যদি তাদের শর্ত মানে, তাহলে তারা সমর্থন দেবে।  এদিকে খাতাই খুলতে পারেনি তৃণমূল। ঝুলিতে নোটার থেকেও কম ভোট। ধাক্কা খেয়েছে বাম -কংগ্রেস জোটও। ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে ৬০টির মধ্যে ২৮টি আসনেই প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হতে দেখা গেল, একটি আসনও দখল করতে পারেনি জোড়াফুল শিবির। তাদের সমর্থনে ভোট পড়েছে মাত্র ০.৮৮ শতাংশ। তার চেয়ে বেশি ভোট পড়েছে নোটায়। নির্বাচন কমিশনের হিসেব বলছে, ত্রিপুরায় নোটায়. ১.৩৬ শতাংশ ভোট পড়েছে।  হার-জিত নিয়ে তাঁরা ভাবছেন না বলে যদিও এর আগে জানিয়েছিলেন অভিষেক। যত কমই ভোট পড়ুক না কেন, মাত্র এক বছরের চেষ্টায় তা যথেষ্ট বলে জানিয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার ফলাফল প্রকাশ হতে দেখা গেল, প্রত্যাশা অপূর্ণই থেকে গিয়েছে জোড়াফুল শিবিরের। কোনও পক্ষকেই পছন্দ না হলে, যে নোটার বোতাম টিপে মতামত জানান সাধারণ মানুষ, তার চেয়েও কম ভোট পেয়েছে তৃণমূল।


আরও পড়ুন:রাতের শহরে 'Hit and Run', খুনের অভিযোগে গ্রেফতার ৭