ট্রুডোই প্রথম বিদেশি রাষ্ট্রনেতা যিনি ভারতের কৃষকদের বিক্ষোভে সমর্থন জানিয়ে কূটনৈতিক বিতর্কের সূচনা করলেন।
গত মঙ্গলবার শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানকের ৫৫১-তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত ফেসবুক ভিডিও আলোচনায় কানাডার সরকারের তরফে কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে নয়াদিল্লির কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ট্রুডো। দ্রুত তার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বিদেশমন্ত্রক তা খারিজ করে দেয় ‘অবাঞ্ছিত’ তকমা দিয়ে।
নয়াদিল্লিতে প্রকাশিত সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শুক্রবার কানাডার হাইকমিশনারকে বিদেশমন্ত্রকে ডেকে পাঠিয়ে ডিমার্শে বা আনু্ষ্ঠানিক কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়, কানাডার প্রধানমন্ত্রী, কয়েকজন ক্যাবিনেট মন্ত্রী ও পার্লামেন্ট সদস্য ভারতীয় কৃষকদের নিয়ে যেসব মন্তব্য করেছেন, তা আমাদের ঘরোয়া বিষয়ে অন্যায় হস্তক্ষেপ, যা মেনে নেওয়া চলে না। এধরনের কাজকর্ম অব্যাহত থাকলে ভারত ও কানাডার সম্পর্কে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। কানাডার নেতৃত্ব কানাডায় আমাদের হাইকমিশন ও কনস্যুলেটের সামনে সন্ত্রাসবাদীদের জড়ো হতে উত্সাহ দিয়েছেন যা নিরাপত্তা, সুরক্ষার বিষয়টি তুলে ধরছে। আমাদের আশা, কানাডা সরকার ভারতীয় কূটনৈতিক কর্মীদের পূর্ণ নিরাপত্তা ও সেদেশের রাজনৈতিক নেতারা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপকে বৈধতা দেওয়ার মতো মন্তব্য করা থেকে যাতে বিরত থাকেন, তা সুনিশ্চিত করবে।
এমপি বারদিস ছাগ্গার আয়োজিত ফেসবুক আলোচনায় ট্রুডো বলেছিলেন, ভারত থেকে আসা কৃষক প্রতিবাদ, বিক্ষোভের খবর প্রথমেই উল্লেখ না করলে ভুল হবে। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, আমরা সকলেই পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন। আমি জানি, আপনাদের অনেকেরই কাছে এটা বাস্তব। আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, কানাডা সবসময় শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারকে রক্ষা করবে। আমরা আলোচনার গুরুত্বে বিশ্বাস করি এবং সেজন্যই আমরা নানা মাধ্যম দিয়ে সরাসরি ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে আমাদের উদ্বেগ জানিয়েছি। ভার্চুয়াল আলোচনাসভায় কানাডার মন্ত্রীরা, নবদীপ বাইনস, হরজিত সজ্জনও ছিলেন। ছিলেন শিখ সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ লোকজনও। ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত, সম্ভবত কানাডার প্রভাবিত ভারতীয় বংশোদ্ভূত সম্প্রদায়, বিশেষত, শিখসমাজের মন জয় করতেই এমন মন্তব্য ট্রুডোর। কানাডায় বর্তমানে ১৮ জন শিখ এমপি আছেন, যাঁদের ১৩ জনই ট্রুডোর লিবারেল পার্টির।