আঙ্কারা: মৃত্যুমিছিল বললেও লঘু করে দেখানো হয় ক্ষয়ক্ষতি। তুরস্ক-সিরিয়া ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা এ বার ৪১ হাজার ছাড়িয়ে গেল (Turkey-Syria Earthquake)। কমপক্ষে ৩২ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে গোড়াতেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। কিন্তু প্রকৃতির রোষ তাদের সব হিসেব-নিকেশও ছাপিয়ে গেল। পাশাপাশি অবস্থিত দুই দেশের প্রাণহানি। ক্ষয়ক্ষতির ইয়ত্তাই নেই (Turkey Earthquake)।
দুই দেশে বিপুল প্রাণহানি, ক্ষয়ক্ষতির ইয়ত্তাই নেই
গত ৬ ফেব্রুয়ারি তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক এবং সিরিয়া। পর পর জোরাল কম্পন অনুভূত হয়। তার পর মুহুর্মুহু আফটারশক। তাতই চোখের পলকে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় চারিদিক। তার পর এক দু'সপ্তাহ কাটতে চললেও, রেশ কাটেনি ভয়াবহতার। বরং যত সময় যাচ্ছে, পরিস্থিতি আরও ঘোরাল হচ্ছে। দক্ষিণ তুরস্কে এখনও বহু জায়গায় ধ্বংসস্তূপের নিচে গোঙানি শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। গতকালই সেখানে ন'জনকে ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে বার করে আনা গিয়েছে জীবন্ত অবস্থায়। তাতে যদিও কিছু মানুষের বেঁচে থাকা নিয়ে আশায় বুক বাঁধছেন তাঁদের পরিবারের লোকজন।
আরও পড়ুন: NBDA on IT Raid: BBC অফিসে আয়কর হানা! তীব্র নিন্দা সংবাদমাধ্যম সংগঠনের
বিপর্যয় অনুধাবন করতে পেরে, আগেই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ১০ শহরে তিন মাসের জরুরি অবস্থা জারি করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তইপ আর্দোয়ান। তবে এই মুহূর্তে আহত, গৃহহীনদের পুনর্বাসন, নিরাপত্তার উপরই বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। ভূমিকম্পে বহু মানুষ সেখানে সর্বস্ব হারিয়েছেন। হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় তাঁবু খাটিয়ে দিনপাত করছেন তাঁরা। জুটছে না দু'মুঠো ভারাও। তাঁদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া, হাতে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ায়ই প্রধান হয়ে উঠেছে।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ১০ শহরে তিন মাসের জরুরি অবস্থা
'হু'-সহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠন ইতিমধ্যেই তুরস্ক এবং সিরিয়ায় সাহায্য পাঠিয়েছে। তবে দক্ষিণ তুরস্কের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। সে দেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র বিল্ডিং দাঁড় করিয়ে দেওয়া নিয়ে লাগাতার সতর্ক করে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরা। নগরায়নের প্রসার ঘটাতে গিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে দিয়েছিলেন সতর্কবার্তা। কিন্তু কোথাও থেকে প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ভূমিকম্পের পর তুরস্কের ৬৫ শতাংশ ঘরবাড়িই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলে গিয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। তাই আগামী দিনে ফের বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা।