গরম পড়তে না পড়তেই ভিড় বাড়ছে পাহাড়ে। আর পাহাড়-প্রেমী পর্যটকদের অনেকেরই প্রিয় ডেস্টিনেশন হিমাচল প্রদেশ। সিমলা, কুলু, মানালি থেকে লাহৌল, স্পিতি । এ সময় পাহাড়ে যেমন আরাম, তেমনই শান্তি। কিন্তু এরই মধ্যে স্পিতি উপত্যকায় ঘটে গেল এক ভয়াবহ ঘটনা।  মৌদ গ্রামের কাছে কয়েক মিনিটের তুষারধসে চাপা পড়ে গেলেন ২ ব্যক্তি। কয়েকদিন ধরেই আবহাওয়া প্রতিকূল সেখানে।তারই মধ্যে এই ঘটনা।


লাহৌল স্পিতি জেলায় ভারী তুষারপাত চলছে কয়েকদিন ধরে। কাঁপুনি ধরা ঠান্ডা। আবহাওয়া দুর্যোগপূর্ণ। চাপা পড়েছে জলের পাইপলাইন। তাই এলাকা জুড়ে পানীয় জলের সমস্যা। তাই কাজে নেমেছিলেন জলশক্তি বিভাগের কর্মচারীরা। গ্রামে জল সরবরাহ স্বাভাবিক করার জন্য বরফের চাদর সরাতে ব্যস্ত ছিলেন তাঁরা। তখনই একটি তুষার ধস নামে। বরফের চাঁইয়ের নিচে চাপা পড়ে যান দুই কর্মী। 


এরকম ভয়াবহ তুষার ধসে চাপা পড়লে মৃত্যু একপ্রকার নিশ্চিত বলেই ধরে নেন সকলে। কিন্তু ভাগ্যের জোরে,  অলৌকিকভাবে বেঁচে যান তাঁরা । দুপুর ১২ টা নাগাদ তুষারধসটি নামে। পাহাড়ের উপর দিয়ে নেমে আসা বিশাল তুষারচাঁইয়ের নিচে চাপা পড়ে যান মৌদের বাসিন্দা নওয়ান তেনজিং এবং জলশক্তি বিভাগের কর্মচারী পদ্মা জিমদাই। তা দেখে গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তারপর গ্রামবাসীরা প্রায় ১৫ মিনিট পর উভয়কেই উদ্ধার করতে সক্ষম হন। 


টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশ, টানা তুষারপাত এবং তুষারধসের ফলে গ্রামের চারটি জলের ট্যাঙ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ।  বাসিন্দারা প্রাকৃতিক জলের উৎস খুঁজতে গিয়ে তুষারধসে আটকা পড়ে যান। গ্রামবাসীরা সঙ্গে সঙ্গে বরফের চাঁই কেটে , তুষার সরিয়ে  তাঁদের  উদ্ধার করে। প্রায় দশ ফুট তুষারপাতের নিচে চাপা পড়ে ছিলেন তাঁরা।  এটি একটি অলৌকিক ঘটনা থেকে কম কিছু নয়,বলছেন গ্রামবাসীরা। 


টানা তুষারপাতের ফলে, সড়ক যোগাযোগ এবং জল সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়। পুরো জেলা অন্ধকারে ডুবে যায়। ২৫ ফেব্রুয়ারি লাহৌল স্পিতি রাজ্যের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে। জেলার বেশিরভাগ অংশে এখন বিদ্যুৎসরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলার ১০৩টি রাস্তা বন্ধ ছিল। আগামী ১৮ এবং ১৯ মার্চ আবার ভারী তুষারপাতের আশঙ্কা রয়েছে কিন্নর, কুলু, লাহৌল স্পিতি এবং চাম্বায়।