জয়পুর: খাতায় কলমে রাজপাট চলে গিয়েছে বহুদিন আগেই। কিন্তু সিংহাসন নিয়ে টানাপোড়েন অব্যাহত আজও। সেই নিয়ে এবার ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হল রাজস্থানের উদয়পুরে। রাজপ্রাসাদে ঢোকা নিয়ে পরিবারের দুই গোষ্ঠীর মধ্যেকার সংঘর্ষ কার্যত রণক্ষেত্রের একার নিল। এলোপাথাড়ি পাথরবৃষ্টি চলল গভীর রাত পর্যন্ত। এই ঘটনায় বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামাতে হয় পুলিশও। (Udaipur City Palace)
বিবাদের সূচনা মেবারের ৭৭তম মহারাণা হিসেবে বিজেপি বিধায়ক বিশ্বরাজ সিংহ মেবারের সিংহাসনে আরোহণকে ঘিরে। চলতি মাসের শুরুতে বিশ্বরাজের বাবা মহেন্দ্র সিংহ মেবার মারা যান। এর পর সোমবার সিংহাসনে অভিষিক্ত হন বিশ্বরাজ। অর্থাৎ চিতোরগড় দুর্গে রাজপরিবারের প্রধান হন তিনি। এর পর সন্ধেয় অনুগামীদের নিয়ে উদয়পুর রাজপ্রাসাদে ঢুকতে যান। কিন্তু সেখানে তাঁদের বাধার সম্মুখীন হতে হয় বলে অভিযোগ। (Mewar family Clash)
জানা গিয়েছে, উদয়পুর রাজপ্রাসাদটি বিশ্বরাজের কাকা শ্রীজি অরবিন্দ সিংহ মেবার এবং তাঁর সন্তানদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সোমবার বিশ্বরাজ প্রথমে একলিঙ্গনাথ মন্দিরে পুজো দেন, যা তাঁদের পারিবারিক দেবতা। এর পর প্রাসাদে ঢুকতে গেলে মূল ফটকে আটকে দেওয়া হয় তাঁকে। তুতোভাই লক্ষ্য রাজ সিংহ মেবারের সঙ্গে ঝামেলা বাধে। রাত যত বাড়তে থাকে, ততই উত্তেজনা বাড়তে থাকে। বিজেপি বিধায়ক বিশ্বরাজের অনুগামীরা ফটক টপকে প্রাসাদে ঢোকার চেষ্টা করেন, বাধা পেয়ে এলোপাথাড়ি পাথরবৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ।
এমন পরিস্থিতিতে প্রাসাদের ভিতরেও প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। সেখান থেকেও বিশ্বরাজের সমর্থকদের লক্ষ্য় করে ইঁট, পাথর উড়ে আসার ফুটেজ সামনে এসেছে। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সেখানে পুলিশ বাহিনী নামাতে হয়। উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু পুলিশের সঙ্গেও খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয় বিশ্বরাজের অনুগামীদের। ব্যারিকেড টপকে প্রাসাদে ঢোকার চেষ্টা করেন তাঁরা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, একলিঙ্গনাথ মন্দির এবং উদয়পুর প্রাসাদ, দুইয়েরই দায়িত্বে রয়েছেন অরবিন্দ এবং তাঁর পরিবার। তিনি শ্রী একলিঙ্গজি ট্রাস্টের চেয়ারম্যান এবং ম্য়ানেজিং ট্রাস্টি। রবিবারই ওই সংস্থার তরফে নোটিস জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়, বিশ্বরাজ ট্রাস্টের সদস্য নন। নিরাপত্তার কারণে অননুমোদিত কাউকে সোমবার প্রাসাদে ঢুকতে দেওয়া হবে না। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে আঁচ করে আগে থেকেই প্রাসাদের বাইরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। ব্যারিকেড করে বন্ধ করে দেওয়া হয় প্রাসাদে ঢোকার রাস্তা। এর পর বিশ্বরাজ পৌঁছলে পরিস্থিতি তেতে ওঠে। স্থানীয় প্রশাসন চেষ্টা করলেও, এখনও সুরাহা হয়নি। ঘটনাস্থলে এখনও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।