বুলন্দশহর: উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের মন্দিরে ২ সাধু হত্যায় কোনও ধর্ম বা সম্প্রদায়ের যোগ নেই বলে জানাল আদিত্যনাথ প্রশাসন। ৫২ ও ৩৫ বছর বয়সি দুই সাধুকে সোমবার রাতে খুনের ঘটনায় রাজু নামে এক অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
রবীন্দ্র কুমার নামে এক পদস্থ পুলিশকর্তা বলেছেন, রাজু আপাততঃ জেরায় বলেছে, সে ভাং খেয়ে নেশার ঝোঁকে মন্দিরে ঢুকে সাধুদের হত্যা করেছে। তরবারির কোপে মেরে ফেলার কথা বলা হলে সে দাবি করেছে, শুধু লাঠিই ব্যবহার করেছিল। সে এমন দাবিও করে যে, এই খুন ভগবানের ইচ্ছাতেই হয়েছে।
পুলিশের বক্তব্য, মুরলি ওরফে রাজু তফসিলি জাতিভুক্ত, মন্দির থেকে ‘চিমটে’ নিয়ে যাওয়ায় তাকে চুরির অভিযোগ তুলে গালিগালাজ, বকাঝকা করেন সাধুরা, রাগে সে তাদের খুন করে। খুনের পর গ্রামবাসীরা তাকে ভাং খেয়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় দেখতে পায়।
ঘটনাচক্রে অঙ্গপ্রতঙ্গ বেচার জন্য বাচ্চা চুরির গুজব ছড়িয়ে গত ১৬ এপ্রিল মহারাষ্ট্রের পালঘরে দুই সাধু ও তাদের গাড়িচালককে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলার ঘটনায় করোনাভাইরাস সংক্রমণকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া পরিস্থিতিতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে সরব হয়েছিল মহারাষ্ট্রের শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট সরকার। কিন্তু রাজ্য়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ গ্রেফতার ১০১ জনের মধ্যে একজনও মুসলিম নেই বলে জানিয়ে দেন, বলেন, কোনও সাম্প্রদায়িক যোগসাজশই নেই। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উদ্ধবকে ফোন করে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেন। আদিত্য়নাথও উদ্ধবকে ফোন করেন। বিজেপি নেতাদের একাংশ দাবি করেন, এটি সাম্প্রদায়িক হামলা, পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাই।
আজ উদ্ধব পাল্টা ফোন করেন আদিত্য়নাথকে। পরে বলেন, সাধু হত্যা নিয়ে কথা হয়েছে। বলেছি, এমন জঘন্য হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আপনার পাশে আছি। ঠিক আমরা যেমন সক্রিয় হয়ে অভিযুক্তদের ধরেছি, আশা করব, আপনারাও সেরকম করবেন, সাম্প্রদায়িক রং দেওয়া হবে না এ ঘটনায়। আদিত্য়নাথ সাম্প্রদায়িক যোগসূত্র না থাকার দাবি করলেও তাঁকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর ফোনের পর এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরের সম্ভাবনা উঁকি মারছে।
সঞ্জয় রাউত সহ বেশ কয়েকজন শিবসেনা নেতা সাধু হত্যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সঞ্জয় ট্যুইট করেন, ভয়ঙ্কর! উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে মন্দিরে দুই সাধু খুন হলেন। কিন্তু আমি সবাইকে এই হত্যায় সাম্প্রদায়িক রং না লাগাতে আবেদন করব। পালঘরের ঘটনা নিয়ে ওরা সেটাই করতে চেয়েছিল।
উত্তরপ্রদেশের সাধু হত্যা নিয়ে রাজনীতি হওয়া উচিত নয়, দোষীদের সাজা দেওয়ার দাবি তুলে ট্যুইট করেছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী।