মধ্যপ্রদেশের  উজ্জয়িনীর মহাকালেশ্বর মন্দির এলাকায় ভয়াবহ আগুন।  দূর থেকেই দেখা গেছে কালো ধোঁয়া। কুণ্ডলী পাকানো ধোঁয়ায় ঢেকেছে চারিপাশ। এই বৈশাখ মাসে মন্দিরে এমনিতেই ভিড় বেশি । তার উপর আজ সোমবার। এদিন শিব মন্দিরে ভিড় এমনিতেই বেশি। তাই আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। 

সোমবার শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, ভক্ত ও মন্দিরের কোনও ক্ষতি হয়নি। মন্দিরে ১০০-এর বেশি ছোটো ছোটো দেবতার মন্দির আছে। এখানে বিরাট ভক্ত সমাগম হয়ে থাকে। তাই মন্দিরের কাছে আগুন লাগায় আতঙ্ক গ্রাস করে।   

গত বছর, ২০২৪ এ দোলের দিন সকালে উজ্জ্বয়িনীর মহাকালেশ্বর মন্দিরে বিধ্বংসী আগুন। অগ্নিদগ্ধ হন পূজারী-সহ ১৩ জন। অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হোলি উপলক্ষ্যে মহাকালেশ্বর মন্দিরে সেদিন ভস্ম আরতি চলছিল। সেই সময় আবির ছোড়া হয়। সেই আবির প্রদীপের ওপর পড়ায় আগুন লেগে যায় । 

মহাকালেশ্বর মন্দির সম্পর্কে 

বিভিন্ন পুরাণে মহাকালেশ্বর মন্দিরের মহিমা বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। এখানকার জ্যোতির্লিঙ্গ দক্ষিণামূর্তি স্বয়ম্ভূ। অর্থাৎ নিজেই আবির্ভূত হয়েছেন বলে বিশ্বাস।  অন্য মন্দিরগুলির মতো এখানে লিঙ্গ স্থাপন করা হয়নি। মন্দিরে শতাধিক ছোটো ছোটো  মন্দির আছে। মন্দির চত্বরের ভিতরে একটি বড় জলাশয় আছে, যা কোটি তীর্থ নামে পরিচিত। ধারণা করা হয়, এখানকার জল পবিত্র এবং ভক্তরা এখানে স্নান  করে পুণ্যলাভের আকাঙ্ক্ষা করে। মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের ইতিহাস বেশ রোমাঞ্চকর। 

মহাকাল মন্দিরের ইতিহাস      

শতাব্দী-শতাব্দী ধরে এই স্থান মানুষের বিশ্বাসের স্থল।  এটি ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে একটি। অবন্তীপুরার রাজা বিক্রমাদিত্য বাবা মহাকালের ভক্ত ছিলেন এবং ভগবান শিবের আশীর্বাদে তাঁর বংশ প্রায় ১৩২ বছর শাসন করেছিল বলে শোনা যায়। ১২৩৫ সালে দিল্লির সুলতান ইলতুতমিশ মহাকালেশ্বর মন্দির সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। তবে  রক্ষা পায় জ্যোতির্লিঙ্গ। সেটিকে রাখা হয়েছিল প্রাচীন এক কূপে।                

ভস্মের শৃঙ্গার

এখানে মহাকালেশ্বর ভস্মে শৃঙ্গার হিসেবে। মহাকালেশ্বর মন্দিরে ভস্ম আরতির প্রথা অনেক পুরোনো। এখানকার ভস্মারতি বিশ্ববিখ্যাত। শিবপুরাণ অনুসারে, ভস্ম তৈরির জন্য কপিলা গাভীর গোবর, শমি কাঠ, পিপল, পলাশ, বড়, অমলতাস ও বেরের কাঠ একসাথে জ্বালানো হয়। সঙ্গে হয় মন্ত্রোচ্চারণ।