অযোধ্যা: কানাকড়ি ছাড়াই অ্যাকাউন্ট খোলা যায় এই ব্যাঙ্কে। 'রিটার্ন' বলতে মানসিক শান্তি। গল্পকথা নয়, অযোধ্যার 'ইন্টারন্যাশনাল শ্রী রাম সীতা ব্যাঙ্ক' এখন নজর কাড়ছে পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের অনেকের। এখানে অ্যাকাউন্ট খুললে টাকাপয়সা জমা রাখার কোনও নিয়ম নেই। বদলে রাখতে হবে এক ধরনের 'বুকলেট' যার পাতায় পাতায় 'সীতারাম' লেখা থাকবে।


ব্যাঙ্ক সম্পর্কে...
এটি এক ধরনের আধ্যাত্মিক ব্যাঙ্ক। নতুন নয়। ১৯৭০ সালের নভেম্বরে, শ্রী রামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের প্রধান, মহন্ত নৃত্যগোপাল দাস ব্যাঙ্কটি নির্মাণ করেছিলেন। ভারত তো বটেই, আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা, নেপাল, ফিজি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত এই ব্যাঙ্কে গ্রাহক সংখ্যা ৩৫ হাজারের বেশি। হিসেব বলছে, শ্রীরামচন্দ্রের ভক্তদের থেকে ২০ হাজার কোটিরও বেশি 'সীতারাম' লেখা বুকলেট সংগ্রহ করে ফেলেছে এই ব্যাঙ্ক। ম্যানেজার পুনিত রাম দাস মহারাজ জানাচ্ছেন, গত মাসে রামলালার মূর্তি প্রতিষ্ঠার পর প্রত্যেক দিন এখানে আসা মানুষজনের ভিড় বাড়ছে।  


বিশদ...
ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের কথায়, 'কর্তৃপক্ষ বিনা খরচে ভক্তদের বুকলেট এবং লালকালির পেন দিয়ে থাকেন। প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্টের উপর নজরদারি চলে। এখানে কাউকে অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে ৫ লক্ষ বার সীতারাম লিখতে হয়। তবে পাসবুক ইস্যু করা হয়।' ভারত ও বিদেশ মিলিয়ে 'ইন্টারন্যাশনাল শ্রী রাম সীতা ব্যাঙ্ক'-র ১৩৬টি শাখা রয়েছে। গ্রাহকদের অনেকে মেল করেও বুকলেট পাঠিয়ে দেন, জানালেন ম্যানেজার। সেই মতো হিসেবনিকেশ রাখা হয়। 
পর্যটকদের অনেকে বহু সময় 'সীতারাম' লেখার তাৎপর্য জিজ্ঞাসা করেন।  পুনিত রাম দাস মহারাজের কথায়, 'অন্তরের বিশ্বাস ও মানসিক শান্তির জন্য আমরা মন্দিরে দেবী-দেবতার দর্শনে যাই। ঠিক সেভাবেই সীতারাম লিখে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রেখে দেওয়া প্রার্থনার একটি ধরন। কথায় বলে না, ঈশ্বর সকলের পাপ-পুণ্য়ের হিসেব রাখেন?' তিনি আরও জানালেন, ভক্তেরা শ্রীরামের নাম করে মানসিক শান্তি পান। অনেকের বিশ্বাস, ৮৪ লক্ষ বার এই নাম লিখলে 'মোক্ষপ্রাপ্তি' সম্ভব।


কী বলছেন পুণ্যার্থীরা?
বিহারের গয়ার জিতু নাগর গত ১৪ বছর ধরে এই ব্যাঙ্কে আসছেন। তিনি জানালেন, এই ভাবে 'সীতারাম' লিখেই প্রার্থনা করেন তিনি। মন্দিরে প্রার্থনা করার পরিবর্তে এখানে এভাবে প্রার্থনা করেও ফল পেয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, ইতিমধ্যে ১ কোটি ৩৭ লক্ষ বার নাম লিখে ফেলেছেন বুকলেটে। এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। প্রত্যেকেই আসছেন, ভক্তির অ্যাকাউন্ট খুলতে।


আরও পড়ুন:গহীন অরণ্যে লুকিয়ে বহু রহস্য! আমাজনের চমকে দেওয়া এই তথ্য আপনি জানেন?