নয়াদিল্লি: রাম মন্দির তৈরির প্রস্তুতির মধ্যেই অযোধ্যায় শুরু হয়ে গিয়েছে মসজিদ নির্মাণের কাজ। অযোধ্য়া মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির তৈরি হলেও মসজিদ নির্মাণের জন্যে অযোধ্যাতেই পাঁচ একর জমি দিতে হবে। সেই রায় অনুযায়ী, অযোধ্যারই ধান্নিপুরে পাঁচ একর জমি দেওয়া হয়েছে মসজিদ তৈরির জন্যে। আর সেই মসজিদ নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যেই 'ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন' নামে ট্রাস্ট তৈরি করা হয়েছে। সেখানে মসজিদ, ইন্দো-ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, লাইব্রেরি ও হাসপাতাল তৈরি হবে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ যোগী অবশ্য মন্তব্য করেছেন, তিনি হিন্দু। তাই মসজিদের উদ্বোধনে যেতে পারেন না।সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে যোগী বলেন, “আপনি যদি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আমার মত জানতে চান, তাহলে বলব, কোনও ধর্ম বা সম্প্রদায়কে নিয়ে আমার সমস্যা নেই। কিন্তু যদি যোগী হিসাবে আমার মত জানতে চান, আমি নিশ্চয় মসজিদের উদ্বোধনে যাব না। কারণ আমি হিন্দু। আমি নিজের উপাসনা বিধি অনুযায়ী কাজ করব।”
মসজিদ উদ্বোধনে তাঁর আমন্ত্রিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে যোগী বলেন, “এক্ষেত্রে আমি বাদী নই, প্রতিবাদীও নই। এজন্য আমাকে নিমন্ত্রণ করা হবে না। আমিও যাব না। আমাকে কেউ আমন্ত্রণই জানাবে না। যেদিন তারা আমাকে আমন্ত্রণ জানাবে, সেদিন অনেকের ধর্মনিরপেক্ষতার ভাবনায় আঘাত লাগবে। আমি চাই, তাদের ধর্মনিরপেক্ষতায় যেন আঘাত না লাগে। আমি নীরবে চেষ্টা করে যাব যাতে রাজ্যের প্রতিটি মানুষ সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পায়। এক্ষেত্রে কোনও বৈষম্য করা হবে না।” কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির দ্বিচারিতার সমালোচনা করে যোগী বলেন, “টুপি পরে ইফতারের পার্টিতে উপস্থিত হওয়া ধর্মনিরপেক্ষতা নয়। এই নাটকটা মানুষের বোঝা উচিত। সকলের বাস্তব পরিস্থিতিটা জানা উচিত।”
উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র লালন কুমার উল্লেখ করেন, প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীই বাবরি মসজিদের তালা খুলে দিয়েছিলেন। বিজেপির সমালোচনা করে লালন বলেন, তারা ভুয়ো হিন্দুত্বে বিশ্বাসী। তারা দেখাতে চায়, প্রভু রামকে কেবল তারাই পুজো করে।
উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব যোগীর মন্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, 'রাজ্যের মানুষের কাছে যোগীর ক্ষমা চাওয়া উচিত।' দলের মুখপাত্র পবন পান্ডে বলেন, 'যোগী গোটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, শুধু হিন্দুদের নন। রাজ্যের যত হিন্দু মানুষ, মুসলিম মানুষ-সকলেরই একজনই মুখ্যমন্ত্রী-যোগী আদিত্যনাথ। কিন্তু তাঁর এই বক্তব্য মুখ্যমন্ত্রী পদের সম্মানহানি করেছে। এই কারণে রাজ্যের সমস্ত মানুষের কাছে তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত।'