লখনউ: খুশি মনে গিয়েছিলেন নেপালে। উদ্দেশ্য ছিল পশুপতিনাথে মানতের পুজো দেওয়া। সন্তানের জন্ম নিয়ে নেপালের এই প্রখ্যাত মন্দিরে এর আগে মানত করে গিয়েছিলেন। ছ'মাস আগে পুত্র সন্তান হওয়ায় সেই আনন্দেই মানতের পুজো দিতে এসেছিলেন নেপালে। কিন্তু দেবদর্শন করার পর আর ফেরা হল না সোনুর। 


সোনুর এক আত্মীয় জানান, সোনু ছিলেন মদের দোকানের মালিক। নেপালে পোখরায় বিমান দুর্ঘটনায় সোনু জয়সওয়াল এবং তার সঙ্গে থাকা তিন বন্ধুর মৃত্যুর খবর উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর জেলার চক জয়নাব গ্রামে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই শোকের ছায়া নামে এলাকায়। আকস্মিক এই ঘটনায় হতবাক হয়েছেন গ্রামবাসীরাও। খবর পেয়েই সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা সোনুর বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন।


জয়সওয়াল পরিবার সূত্রে খবর, তাঁর দুই কন্যা এবং একটি ছেলে আছে বাড়িতে। ছেলে হওয়ার পর মানতের পুজো দিতেই তিন বন্ধুর সঙ্গে পশুপতিনাথে গিয়েছিলেন তিনি। ইচ্ছেপূরণ করে ফেরার পথে আর ফেরা হল না তাঁর। ভাগ্যের এই পরিহাস মেনে নিতে পারছে না জয়সওয়াল পরিবারের কেউই। 


এই মর্মান্তিক খবর এখনও পর্যন্ত সোনুর স্ত্রী এবং সন্তানদের কিছু জানান হয়নি। তাঁরা অন্য বাড়িতে আছেন। সোনু ছাড়াও তাঁর তিন বন্ধু অভিষেক কুশওয়াহা (২৫), বিশাল শর্মা (২২) এবং অনিল কুমার রাজভর (২৭) এই বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। গ্রামবাসীরা জানিয়েছিলেন, পোখরার জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে প্যারাগ্লাইডিং করে চারজন মঙ্গলবার গাজিপুরে ফিরবেন, এমনটাই জানিয়েছিলেন তাঁরা। 


আরও পড়ুন, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের সিগনাল পেয়েই দ্রুত নেমে আসে বিমান, দুর্ঘটনার পর উঠে আসছে তথ্য


নেপালে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা। এখনও পর্যন্ত ৫ ভারতীয়-সহ ৬৮ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। কাঠমাণ্ডু থেকে পোখরা যাওয়ার পথে বিমানটি ভেঙে পড়ে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ২ যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। crue মেম্বার সহ বাকি যাত্রীদেরই মৃত্যু হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। 


৫ ভারতীয় ছাড়াও বিমানে ছিলেন ৫৩ জন নেপালি এবং ৪ জন রুশ নাগরিক। দক্ষিণ কোরিয়ার ২ জন, আর্জেন্তিনাা, ফ্রান্স এবং আয়ারল্যান্ডের ১ জন করে নাগরিক। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কাঠমাণ্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক 
বিমানবন্দরের কন্ট্রোল রুমে যান নেপালের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পোখরা বিমানবন্দর থেকে উড়ান পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। কীভাবে ঘটল এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা? জানতে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু করেছে নেপাল সরকার।