উত্তরাখণ্ড: স্ত্রীর জন্য জামা-কাপড় কেনা হোক বা নিজের জন্য নতুন স্মার্টফোন, এবার থেকে খরচ করার আগে বসের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। নিতে হবে কর্তৃপক্ষের অনুমতি, আবেদন মঞ্জুর হলে তবেই করা যাবে খরচ। এমনকী বাড়িতে মিক্সার গ্রাইন্ডার খারাপ হয়ে গেলে একটি দামি মিক্সার গ্রাইন্ডার কেনার জন্যও নিতে হবে বসের অনুমতি ! টিভি, ফ্রিজ, কম্পিউটার, পুজোর শপিং, বিয়ের আয়োজন করতে হলেও একই কাজ করতে হতে পারে ! অদ্ভুত এক নিয়ম জারি হয়েছে উত্তরাখণ্ড রাজ্যে। এই রাজ্যের সরকার জানিয়েছে যে এবার থেকে সমস্ত সরকারি কর্মীদের ৫০০০ টাকার বেশি খরচ করার আগে তাদের বস বা কর্তৃপক্ষের থেকে অনুমতি নিতে হবে। শুধু তাঁকে জানালেই হবে না, তাঁর অনুমোদনও নিতে হবে খরচ করার আগে।
১৪ জুলাই এই নীতি জারি করেছে উত্তরাখণ্ড রাজ্য সরকার যা ইতিমধ্যেই তুমুল ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। উত্তরাখণ্ড সরকার তাদের বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ‘ যে কোনও সরকারি কর্মী তাঁর এক মাসের বেতন বা ৫০০০ টাকা যে পরিমাণটি কম হবে, তার থেকে বেশি মূল্যের কোনও অস্থাবর সম্পত্তি কেনা-বেচা করা বা অন্য কোনোভাবে লেনদেনে অংশ নিলে তাঁকে অবিলম্বে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে এবং তাদের থেকে অনুমতি নিতে হবে।’
এই নির্দেশিকায় আরও বলা হয় যে নিয়মিত লেনদেনকারী ও ব্যবসায়ী ব্যতীত অন্য কোনও ব্যক্তির ক্ষেত্রে যে কোনও লেনদেনের জন্য কর্তৃপক্ষের থেকে আগাম অনুমতি নিতে হবে, নচেৎ সেই কাজ করা যাবে না। এমনকী স্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রেও সরকারি কর্মীদের কেনা বা বিক্রি করার আগে বিভাগীয় প্রধান বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। এই নির্দেশিকায় এই ধরনের সম্পত্তি লিজ দেওয়া বা উপহার দেওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
সরকারি কর্মীদের যোগদানের সময় এবং তারপর প্রতি ৫ বছর অন্তর সমস্ত স্থাবর সম্পত্তি ঘোষণা করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। স্বামী বা স্ত্রী অথবা একই বাড়িতে বসবাসকারী পরিবারের যে কোনও সদস্যের জন্যই এই কাজ করতে হবে বলে জানানো হয়েছে। অর্থাৎ সরকারি কর্মী নিজে ছাড়া তাঁর পরিবারের কেউ যদি ৫০০০ টাকার বেশি মূল্যের কোনও কিছু খরচ করে তখনও কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে এবং তাঁর থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
উত্তরাখণ্ড এসসি-এসটি কর্মী সংগঠনের সভাপতি করম রাম এই নির্দেশকে ‘হাস্যকর’ বলে ব্যক্ত করেছেন। তিনি এই নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘আজকের মুদ্রাস্ফীতি এবং কর-আরোপের যুগে আপনি নিজের বা স্ত্রীর জন্য কিছু কিনতে গেলেই তাঁর খরচ ৫০০০ টাকার বেশি হবে। আপনার স্ত্রী জন্য শাড়ি কিনতে হলেও কি বিভাগীয় প্রধানের থেকে অনুমতি নিতে হবে ? বাচ্চাদের পোশাক কিনতে হলেও কি আপনাকে অনুমতি নিতে হবে ? এই সীমা ৫০০০ টাকার বদলে ১ লক্ষ টাকা করা উচিত ছিল।’