আমরেলি: নয় নয় করে প্রায় ১৫০০ অতিথির সমাগম। মন্ত্রপাঠ করতে হাজির পুরোহিত, ধর্মগুরুরা। শুধু তা-ই নয়, আচার-অনুষ্ঠান মিটে যাওয়ার পর খাওয়া-দাওয়ার এলাহি বন্দোবস্তও। ভাগ্য ফিরিয়ে দেওয়া 'পয়া' গাড়িকে এভাবেই সমাধিস্থ করলেন করলেন গুজরাতের ব্যবসায়ী। চারচাকার গাড়িটিকে এভাবে সমাধিস্থ করার ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যদিও সেই নিয়ে কোনও খেদ নেই ব্যবসায়ীর। জানালেন, ওই গাড়ির প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবেন তিনি। (Viral Video)


গুজরাতের আমরেলি জেলা থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে। ব্যবসায়ী সঞ্জয় পোলারা বৃহস্পতিবার নিজের পুরনো গাড়িটিকে সমাধিস্থ করেন। আর সেই অনুষ্ঠানে শামিল হন প্রায় ১৫০০ মানুষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে দৃশ্য সামনে এসেছে, তাতে সঞ্জয় এবং তাঁর পরিবারের লোকজনকে খামারবাড়িতে আচারানুষ্ঠানে অংশ নিতে দেখা গিয়েছে। ১৫ ফুটের গভীর গর্ত খোঁড়া ছিল। ঢাল বরাবর ওই গর্তে নামানো হয় পুরনো চারচাকার গাড়িটিকে। (Viral News)


যে গাড়িটিকে সমাধিস্থ করেন ব্য়বসায়ী সঞ্জয়, সেটি ১২ বছর পুরনো একটি wagon R. ফুল-মালায় ঢেকে দেওয়া হয়েছিল গাড়িটিকে। গাড়িটিকে মুড়ে দেওয়া হয় সবুজ কাপড়ে। পুরোহিতরা একদিকে মন্ত্রপাঠ করেন, অন্য দিকে ফুলের পাপড়ি ছোড়েন পরিবারের লোকজন। তার পর ক্রেনের সাহায্যে মাটি ভরে গাড়িটিকে সমাধিস্থ করা হয়। । বাড়ি থেকেও রীতিমতো শোভাযাত্রা করে গাড়িটিকে খামারে নিয়ে যাওয়া হয়।  কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় করেন ওই সমারোহ দেখতে। 



সুরতে নির্মাণের ব্যবসা রয়েছে সঞ্জয়ের। জানিয়েছেন, ১২ বছর আগে ওই গাড়িটি কেনেন তিনি। আর তাতেই ভাগ্য বদলে যায় তাঁর। পরিবারে সমৃদ্ধি আসে, ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠে, সম্মান বাড়ে পরিবারের। সঞ্জয়ের দাবি, তাঁর পরিবারের জন্য অত্যন্ত 'পয়া' ছিল ওই গাড়ি। তাই বিক্রির করার কথা ভাবেনইনি। বরং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে নিজেরই খামারবাড়িতে সেটিকে সমাধিস্থ করার সিদ্ধান্ত নেন। গাড়িটিকে সমাধিস্থ করতে ৪ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন তিনি। মাটি টাপা পড়ার আগে গাড়িটির সঙ্গে সপরিবারে ছবিও তোলেন সঞ্জয়।


সঞ্জয় জানিয়েছেন, গাড়িটিকে যেখানে সমাধিস্থ করা হয়েছে, সেখানে একটি গাছ পোঁতার পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁর। ওই গাড়ি যে পরিবারের ভাগ্য পাল্টে দিয়েছিল, তা যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মনে রাখে, তার জন্য কোনও ত্রুটি রাখবেন না তিনি। প্রিয় গাড়িটিকে বিদায় জানাতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন সঞ্জয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে নানাজন নানা কথা বললেও, কিছু কানে তুলতে নারাজ তিনি।