লখনউ: দীপাবলির রাতে হঠাৎ ফোন পুলিশের কাছে। বাড়িতে চোর ঢুকেছে, শীঘ্র আসতে হবে বলে আর্তি ওপার থেকে। ফোন পাওয়া মাত্রই তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। তন্নতন্ন করে খুঁজেও চোরের নাগাল যদিও মেলেনি। কিন্তু কী চুরি গিয়েছে জেনে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ল খোদ পুলিশ। বাড়ির কর্তাকে কী বলা উচিত বুঝে উঠতে পারলেন না কেউই। সেই কথোপকথনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। (Viral Video)
দীপাবলির রাতে উত্তরপ্রদেশের কোতোয়ালি শহরের ঘটনা। মন্নপুরবা থেকে থানায় ফোন করেন স্থানীয় বাসিন্দা বিজয় বর্মা। বাড়িতে চোর ঢুকেছে বলে ফোনে পুলিশকে জানান তিনি। সেই মতো ওই ব্যক্তির বাড়িতে ছুটে যান পুলিশ কর্মীরা। কিন্তু সেখানে গিয়ে চোরের দেখা পাননি তাঁরা। কী ঘটেছে, কী চুরি গিয়েছে জানতে গৃহস্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তাঁর। কিন্তু গৃহস্বামীর কথা শুনে মুখে ফুটল না পুলিশেরও। কী বলা উচিত, বুঝে উঠতে পারলেন না তাঁরাও। (UP Potato Theft)
বিজয়ের সঙ্গে পুলিশের কথোপকথনের ওই দৃশ্য কোনও এক ব্যক্তি ক্যামেরাবন্দি করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও হু হু করে ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ চুরির যে বর্ণনা দিয়েছেন বিজয়, তা শুনে হতবাক সকলে। ওই ভিডিওয় এক পুলিশ কর্মী বিজয়কে প্রশ্ন করেন, "তুমি ফোন করেছিলে? কী নাম তোমার?" বিজয় নাম বলার পর বিশদ তথ্য জানতে চান ওই পুলিশ কর্মী।
ভিডিওয় বিজয়কে বলতে শোনা যায়, "আমি ৪টের সময় বাড়িতে আলুর খোসা ছাড়িয়ে রেখে গিয়েছিলাম। ভাবলাম, বাইরে থেকে একটু খানাপিনা সেরে এসে রাঁধব। এসে দেখলাম আলু গায়েব হয়ে গিয়েছে। এটা পারিবারিক অশান্তি।" এতদূর শুনে ওই পুলিশ কর্মী জানতে চান, "কত আলু ছিল? এক কেজি-দু'কেজি?" জবাবে বিজয় বলেন, "আমি একার জন্য রাঁধি। কত হবে, ২৫০-৩০০ গ্রাম!" ওই পুলিশ কর্মী এতে প্রতিক্রিয়া জানান, "কারও উপর সন্দেহ আছে?" বিজয় বলেন, "সে কী করে বলব!"
রীতি মতো ধৈর্য সহকারে এর পর ওই পুলিশ কর্মী জানতে চান, "কোন মদ পান কর তুমি? নেশা আছে কি?" জবাবে বিজয় বলেন, "ঠেকে গিয়ে একটু খাই। হালকা নেশা আছে। পরিশ্রম করি, মজুরি পাই। সারাদিন খাটা-খাটুনির পর সেই টাকায় একটু-আধটু পান করি। কিন্তু সেটা আসল কথা নয়। আমার আলু খুঁজে দিতে হবে।" ওই কথোপকথনের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় সামনে আসার পরই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।
ভিডিওয় ওই কথোপকথন শুনে অনেকের বিশ্বাসই হয়নি প্রথমে। একজন লেখেন, '২৫০ গ্রাম আলু। চিন্তার বিষয় বইকি! আলুর নিরাপত্তা নিয়ে অবশ্যাই ভাবতে হবে। আলু যে এখন সোনা, কতজনই বা জানেন? ওই গ্রামে নিশ্চয়ই ক্রাইম ড্রামা চলছে।' আর একজন লেখেন, 'মদ খাননি বলুন, নইলে সেনা ডাকবে'। তৃতীয় এক ব্যক্তি লেখেন, 'পুলিশ সাধারণ মানুষের সেবক। ওই ব্যক্তি তা অক্ষরে অক্ষরে মেনেছেন'। সর্বনিম্ন কত গ্রাম ওজনের জিনিস খোয়া যাওয়ার পর্যন্ত পুলিশকে ফোন করা যায়, কেউ কেউ এমন প্রশ্নও করেন।