লখনউ: লোকালয়ে ঢুকে নিশ্চিন্তে ঘুম ডোরাকাটার। দেওয়ালের উপর হাত-পা ছড়িয়ে সুখনিদ্রা। কিন্তু তাতে ঘুম উড়ল বাকি সকলের। রাত জাগল উত্তরপ্রদেশের গোটা গ্রাম। পরে বন দফতরের তরফে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে বাঘটিকে আয়ত্তে আনা হয়। তবে এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনাস্থল থেকে যে ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, তা ভাইরাল হয়ে গিয়েছে নিমেষে। (Viral Video)
উত্তরপ্রদেশের কালিনগরের আটকোনা গ্রানের ঘটনা। সোমবার রাতে পিলভিট জেলার অভয়ারণ্য থেকে গ্রামে ঢুকে পড়ে পেল্লাই আকারের বাঘটি। তবে দৌড়াদৌড়ি করে স্থানীয়দের উত্যক্ত করেনি সে। বরং গুরুদ্বারের বাইরে চওড়া একটি দেওয়াল খুঁজে তার উপর উঠে পড়ে। তার পর সেখানেই সুখনিদ্রায় ডুবে যায়। দেওয়ালের উপর ডোরাকাটাকে শুয়ে থাকতে দেখে পথকুকুরের দলই চেঁচামেঁচি জুড়ে দেয়। তাতে টনক নড়ে স্থানীয়দের। তার পর চাঞ্চল্য ছড়ায় ওই গ্রামে। (Tiger Sleeping on Wall)
লোকালয় ঢুকে বাঘ দিব্যি টেনে ঘুম দিচ্ছে শুনে শোরগোল পড়ে যায় চারিদিকে। শত শত উৎসুক মানুষজন এলাকায় ভিড় জমাতে থাকেন। নিদ্রারত বাঘকে মোবাইলে ক্যামেরাবন্দিও করেন তাঁদের অনেকে। আশপাশের বাড়ির ছাদ থেকেও মোবাইল নিয়ে ঝুঁকে পড়েন মানুষজন। সেই আবহে কিছু অনভিপ্রেত ঘটে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা দেখা দেয়। তড়িঘড়ি ওই দেওয়ালের পাশে জাল টাঙিয়ে দেওয়া হয়।
কিন্তু এতকিছুর মধ্যেও ঘুম ভাঙেনি বাঘটির। রাতভর ওই ভাবেই দেওয়ালের উপর ঘুমায় সে। চড়া আলো ফেললেও নড়েনি একচুল। স্থানীয়দের তরফেই বন দফতরে খবর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাতভর ওই দেওয়াল থেকে নড়ানো যায়নি বাঘটিকে। মঙ্গলবার সকালে ঘুম ভাঙলেও, লম্ফঝম্প করতে দেখা যায়নি। বরং নিজের খেয়ালে চেটে চেটে গা পরিষ্কার করে। আড়মোড়াও ভাঙে। আবার দেওয়ালে শুয়ে একদফা ঘুমের তোড়জোড় করে। এর পর ট্র্যাঙ্কুলাইজার নিয়ে এসে পৌঁছন বন দফতরের কর্মীরা। ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয় প্রথমে। তার পর বাঘটিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
লোকালয়ে বাঘতে সুখনিদ্রা যেতে দেখে রাতভর জেগে ছিলেন আটকোনা গ্রামের মানুষজন। কিন্তু নজর এড়িয়ে বাঘটি লোকালয়ে ঢুকে পড়ল কী করে, সেই নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। কারণ অভয়ারণ্য থেকে লোকালয়ে বাঘের তাণ্ডব চালানোর ঘটনা নতুন নয় সেখানে। প্রায়শই পিলভিটের অভয়ারণ্য থেকে পালিয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে বাঘ। গত চার মাসে এমন ঘটনায় পাঁচ জন মারাও গিয়েছেন। ২০১৫ সালে পিলভিট অভয়ারণ্য তৈরির করার পর থেকে এখনও পর্যন্ত সেখানে প্রায় ৫০টি বাঘের হামালর ঘটনা ঘটেছে।